
Barasat: পুলিশ সূত্রে খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত, অসংখ্য নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়েছে জেলার বিভিন্ন থানায়। কারণ, গত পাঁচমাসে মোট ৫৩৬ জন যুবতী নিখোঁজ হয়েছেন এই এলাকা থেকে। যার মধ্যে প্রায় ৫০০ জনই গৃহবধূ। এমনকি, নিখোঁজের তালিকায় অবিবাহিতারাও আছেন। স্বাভাবিকভাবেই, বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসনও।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ মাসে এই গ্রাম থেকে প্রায় ৫০০ জন গৃহবধূ পালিয়েছেন। কারণ, তারা প্রত্যেকেই জড়িয়ে পড়েছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। তাই প্রেমের টানে স্বামী এবং সংসার ছেড়েছেন তারা। তারপর মনের মানুষের সঙ্গে ঘর করা শুরু করেছেন।
তারা স্ত্রীর খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন এক থানা থেকে অন্য থানায়। সেইসঙ্গে, মিসিং ডায়েরিও করা হচ্ছে এবং চলছে খোঁজ। কিন্তু ঘরে আর ফিরে আসছে না স্ত্রীরা। নিখোঁজ বৌ-রা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় পুলিস জোরও খাটাতে পারছেন না। কারণ, তারা সুখী হতে না পেরেই তো স্বেচ্ছায় যাচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শুধুমাত্র বারাসাত পুলিশের অধীনে থাকা এলাকায় একাধিক এইরকম কেসের কথা সামনে আসছে।
মনের টানে প্রেমের ভেলায় ভেসে মাত্র পাঁচ মাসে ঘর ছেড়েছেন ৫০০ গৃহবধূ। জানা গেছে, তাদের কারও স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন অন্য রাজ্যে। কারোর স্বামী আবার ভোরবেলায় বেরিয়ে যান এবং ফেরেন সেই মধ্য রাতে। তাই সারাদিন ফাঁকা বাড়িতেই কাটাতে হয় স্ত্রীদের। আর হাতে থাকে স্মার্টফোন। ফলে, সহজেই সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে অন্য পুরুষের সঙ্গে। ঘনিষ্ঠতা বাড়তেই হয়ে যাচ্ছে বয়ফ্রেন্ড। খুব সহজেই তারা জড়িয়ে পড়ছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। কিন্তু শুধুই কি প্রেমের টান? নাকি অন্য কোনও কারণেই ঘর ছাড়ছেন তারা?
তাদের মতে, অন্য সম্পর্কে জড়ানোর পিছনে থাকতে পারে একাধিক কারণ। কোথাও হয়ত দুজনের ঠিকঠাক আন্ডারস্ট্যান্ডিং হচ্ছে না বা নিত্যদিন ঘরে অশান্তি কিংবা তাতে সামাজিক মাধ্যমে অন্য কোনও পুরুষ যদি চারটি সুন্দর সুন্দর কথা শোনালে এবং রঙিন স্বপ্ন দেখালে সহজেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন সেই মহিলারা। আবার কেউ কেউ আবার বাড়িতেই নিত্যদিন শিকার হচ্ছে গার্হস্থ্য হিংসার। সেখান থেকে আবার পালানোরও পথ খোঁজেন তারা।
এলাকার এক বাসিন্দা মালবিকা রায় জানিয়েছেন, “কোনও একটা সমস্যা তো নিশ্চয়ই থাকবে। আবার সেটা সামাজিক ইস্যুও হতে পারে। কারণ, কোনও মহিলাই চায় না যে, সংসার শুরু করবে এবং তারপর সব ছেড়ে পালিয়ে যাবে। ফলে, বাড়িতেও সমস্যা থাকতে পারে।”
এলাকার আরেক বাসিন্দা অজয় আবার জানিয়েছেন, “আমরা আসলে উন্নতির দিকে এগোচ্ছি। বিদেশি কালচারও ঢুকে পড়ছে এবং সকলের স্বাধীনতা রয়েছে। কেউ তো কারোর কাছে আর বাধা থাকছে না। হাতে মোবাইল এবং সহজেই পরিচয় হয়ে যাচ্ছে একে অপরের সঙ্গে। তাই না পোষালেই বেরিয়ে যাচ্ছে। এটা আসলে যার যার মানসিকতার ব্যাপার।”
থানা-পুলিশ হওয়ার পর অবশ্য একাধিক নিখোঁজ বধূ এবং যুবতী বাড়ি ফিরে এসেছেন। সেই সংখ্যাটা সবমিলিয়ে প্রায় ২০০ জনের মতো।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।