লকডাউনের পর থেকে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। আর তা বন্ধ করতে এবার থেকে UNICEF-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করবে রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ইউনিসেফ বাল্যবিবাহ, লিঙ্গ বৈষম্য ও পারিবারিক হিংসা শেষ করার ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই ক্ষেত্রগুলিতে যৌথ উদ্যোগে কাজ করবে ইউনিসেফ। পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে আনন্দধারা প্রকল্পের অধীনে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীও নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যে শিশুদের উপর বঞ্চনা কমানোর দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জীবন ও জীবিকা মিশনের সিইও বিভু গোয়েল বলেছেন বিভিন্ন রাজ্য সরকারে একাধিক বিভাগে ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে বাল্যবিবাহের মত কুপ্রথাগুলি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য।
ইউনিসেফের সঙ্গে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও একসঙ্গে কাজ করছে। স্বেচ্ছেসেবী সংগঠনের মধ্যমেই শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার প্রচার করা হয়। শিশু বিকাশের যেসব সমস্যাগুলি রয়েছে সেগুলিও দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আনন্দধারা হল মূল গ্রামীণ জীবিকা নির্বাহের একটি কেন্দ্র। পশ্চিমঙ্গে ১০ লক্ষেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মত এটিও একটি। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্যই হল মহিলাজের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের একটি প্রক্রিয়া তৈরি করে দেওয়া। যাতে বাল্যবিবাহ ও মহিলা নির্যাতনের মত ঘটনাগুলি আটকে দেওয়া যায়। মহিলাদের স্বনির্ভর হতে শেখানোই এই সংস্থার মূল লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন গোয়েল।
সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানান হয়েছে, পুরো প্রক্রিয়াটি মনিটারিংয়ের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারণ নজরদারী চালান না হলে স্পষ্ট হবে না কতটা সফল হয়েছে তারা। অসাফল্যের ক্ষেত্রে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও সংস্থার পক্ষ থেকে জানান হয়েছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিশু পাচার, কিশোরীর গর্ভধারণ শনাক্তকরণ-সহ একাধিক প্রকল্পের মাইলফলগুলি ট্র্যাক করার সরঞ্জাম আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই স্বেচ্ছেসাবী সংস্থার সদস্যরা হাতে পেয়ে যাবেন বলেও জানান তাঁরা। তিনি আরও বলেছেন, ন্যাশানাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভিসের রিপোর্ট-ভি প্রকাশ করে দিয়েছে এই রাজ্যে ৪৮ শতাংশ গ্রামীণ মেয়ের কম বয়সেই বিয়ে হয়ে যায়। তবে কোভিড মহামারির সময় থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলায় বাল্যবিবাহের ঘটনা বেড়েছে। আগামী অর্থবষে বাল্যবিবাহ - রোধে ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় সরাসরি সক্রিয় ভূমিকা নিতে ১১০টি সংস্থাকে একযোগে উদ্যোগ নিতে হবে।
সংস্থার পক্ষ থেকে জানান হয়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে গিয়ে প্রচার করতে হবে। মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। মেয়েদের অবস্থার একটি ট্র্র্যাকিং চার্ট তৈরি করতে পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। WBSRLM, UNICEF-এর সহযোগিতায়, ক্ষমতায়ন প্রচার করতে এবং উদ্যোগের অগ্রগতি পরিমাপ করতে কিশোরীদের ট্র্যাকার, স্বনির্ভর গোষ্ঠার সঙ্গে আলোচনা পয়েন্ট, বিষয়ভিত্তিক বার্তা এবং পোস্টার তৈরি করেছে।