
Hooghly BJP News: কর্তব্যরত মহিলা পুলিশ কর্মীদের গালে-মাথায় সিঁদুর। চরম শাস্তির মুখে পড়তে হল বিজেপি নেতা-নেত্রীদের। জানা গিয়েছে, কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের সিঁদুর পরানোয় অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার চুঁচুড়া থানায় হাজিরা দিয়ে নোটিস মেনে চলার সম্মতি জানালেন ছয় বিজেপি নেতা কর্মী (BJP News)।
সূত্রের খবর, গত ৩০ মে চুঁচুড়া পিপুলপাতি পাঁচমাথা মোরে বিক্ষোভ অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। প্রধানমন্ত্রীর অপারেশন সিঁদুর বক্তব্যের পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার প্রতিবাদে ছিল সেই আন্দোলন। সেখানে অবরোধ সরাতে গেলে কর্তব্যরত মহিলা পুলিশ কর্মীদের কপালে গালে সিঁদুর লেপে দেয় বিজেপি কর্মীরা। যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়।
ঘটনার পরদিন চুঁচুড়া থানার পুলিশ ছয় বিজেপি নেতা কর্মির বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। নোটিস ধরানো হয় বিজেপি হুগলী সংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ, হুগলি মহিলা মোর্চার সম্পাদক অরূপা সামন্ত সহ ছয় জনকে।
প্রসঙ্গত, 'সিঁদুর' বিতর্কে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। 'সিঁদুর বেঁচে রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী'। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee News) এই মন্তব্যের বিরোধিতায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হুগলী জেলার চুঁচুড়া শহর। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ বঙ্গ বিজেপির। এখানেই শেষ নয়, বিক্ষোভ সামাল দিতে যাওয়া পুলিশ কর্মীদের পাল্টা সিঁদুর পরিয়ে দিতেই চরমে পৌঁছয় উত্তেজনা।
গত ৩০ মে শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে চুঁচুড়ার পিপুলপাতি পাঁচমাথা মোরে। ওইদিন সেখানে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল বিজেপি। অভিযোগ, সেই সময় বিজেপির মহিলা কর্মীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে যান কর্তব্যরত মহিলা পুলিশকর্মীরা। জানা গিয়েছে, সেই সময় আচমকা মহিলা পুলিশ কর্মীদের সিঁদুর পরিয়ে দেন বিজেপির মহিলা নেতৃত্বরা। আর তাতেই ছড়ায় বিতর্ক। চরম উত্তেজনা ছড়ায় চুঁচুড়ার পিপুলপাতি এলাকায়।
জানা গিয়েছে, প্রায় আধঘন্টা ধরে বিক্ষোভ অবরোধ চলে। এরপর চুঁচুড়া থানার পুলিশ বাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা দিয়ে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। বেশ কিছু বিবাহিত মহিলা পুলিশ কর্মী বিক্ষোভকারীদের হটাতে গেলে বিক্ষোভকারী মহিলারা ওই মহিলা বিবাহিত পুলিশ কর্মীদের সিঁদুর পরিয়ে দেন। এতেই খেঁপে ওঠে পুলিশের একটা অংশ। শুরু হয় তুমুল তর্কাতর্কি পুলিশ এবং মহিলা বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। পরে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে হটিয়ে দেয় পুলিশ।
এরপরই তাঁদের বিরুদ্ধে ১৮৯(২)/২২১/১২৬(২)/২৮৫/১৩২/৩৫১(২) বিএনএস এর ধারায় মামলা রুজু হয়। বিজেপি কর্মীদের অবশ্য দাবি, তারা সিঁদুরের অপমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। মহিলা পুলিশ কর্মীদের জোর করে সিঁদুর পরানো হয়নি। আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে।
বিজেপি নেতা সুরেশ সাউ বলেন, ‘’থানায় হাজিরা না দিলে গ্রেফতার করবে বলছে পুলিশ। তাই আমরা হাজিরা দিয়ে নোটিশ কমপ্লাই করেছি। অনুব্রত মন্ডল পুলিশ অফিসারকে হুমকি দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেই। পুলিশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। তাদের ভাবা উচিত ডিএ বাকি আছে তাদেরও। আমি সিঁদুর পরাইনি তবু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ।''
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ''রাজ্যে হিংসা, তোষণ, দাঙ্গা এবং দুর্নীতির রাজনীতি চলছে। মুক্তি দরকার এবং জনগণ বিজেপির উন্নয়ন মডেলের দিকে তাকিয়ে আছে।''
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গকে "হিংসা, তোষণ, দাঙ্গা এবং দুর্নীতির রাজনীতি" থেকে মুক্তি দিতে হবে এবং জনগণ "বিজেপির উন্নয়ন মডেলের" দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গ একসঙ্গে অনেকগুলি সংকটে জর্জরিত। প্রথমত, সমাজে ছড়িয়ে পড়া হিংসা এবং অরাজকতার সংকট। দ্বিতীয়ত, আমাদের মা ও বোনেদের নিরাপত্তাহীনতা যারা জঘন্য অপরাধের শিকার হচ্ছেন। তৃতীয় সংকট হলো তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া চরম হতাশা এবং ব্যাপক বেকারত্ব। চতুর্থ সংকট হলো প্রশাসনের ওপর স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থা ক্রমাগত হ্রাস পাওয়া। পঞ্চম সংকট হলো ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থপর রাজনীতি, যা দরিদ্রদের অধিকার চুরি করে''।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।