মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত সরকারি কর্মীদের দায়ের করা যৌথ মঞ্চের মামলা ওঠে।আদালত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে সমান অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
পঞ্চায়েত ভোটে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার কোনও পরিকল্পনা ছিল রাজ্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। বুথের দায়িত্বে রাজ্য পুলিশেকেই রাখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শুনানির পরেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে স্পষ্ট প্রস্তাব দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। সেখানে বলা হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। তাই পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি বুথেই ৫০:৫০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে আদালত। ভোট গণনা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার প্রস্তাবও দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত সরকারি কর্মীদের দায়ের করা যৌথ মঞ্চের মামলা ওঠে। ভোটে নিরাপত্তার দাবিতে সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে সমান অনুপাতে অর্থাৎ ৫০:৫০ হারে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আদালত আরও জানিয়েছেন নোডাল অফিসার হিসেহে বিএসএফ-র আইজিকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেজন্য তিনি এই সংক্রান্ত সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ও কথাবার্তা বলবেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী রাজ্য পুলিশের ৭০ হাজার সদস্য ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬৫ হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। কিন্তু আদালতের প্রস্তাব অনুযায়ী এবার দুই বাহিনী সমানভাবে মোতায়েন করা হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম রয়েছে। প্রত্যেক বুথে কমপক্ষে চার জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওযান মোতায়েন করা যায়। এক্ষেত্রে রা্জ্যের প্রত্যেকটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই সব দিক বিবেচনা করার দায়িত্ব নো়ডাল অফিসারকে দিয়েছে হাইকোর্ট।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রথমে জানিয়েছেন সব বুথে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে না। টহলদারীর দায়িত্ব দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। কিন্তু রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় এই বার্তা দিয়ে সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১১ জুলাই ফল প্রকাশ। তবে এবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রীতিমত অশান্ত বাংলা। কোথাও ত্রিমুখী কোথাও আবার চতুর্মুখী লড়াই হবে। রাজ্যের চারটি রাজনৈতিক দল সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ও তৃণমূল- ইতিমধ্যেই জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে থেকেই এদিন ভোট প্রচার শুরু করলেন। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতাদের কাঁধেই দায়িত্ব রয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের। কেন্দ্রীয় প্রথম সারির কোনও নেতাই ভোট প্রচারে রাজ্য আসবে না। বাম আর কংগ্রেসও নিজেদের মত করে প্রচার শুরু করেছে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস মনোনয়ন দাখিল করতে দেয়নি। জোর করে মনোনয়ন দাখিল করার পর মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যও চাপ দিচ্ছে শাসকদল। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্য আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
আগামী ৮ জুলাই পঞ্চয়েত নির্বাচন। জন্য কেন্দ্রীয় আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা কেন্দ্রকে তিনটি চিঠি দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে রাজ্যের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে ৩৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। কিন্তু কোথায় কোথায় তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। বাকিদের গন্তব্য কোথায় তা নিয়ে রাজ্য বা রাজ্য নির্বাচন কমিশন এখনও অবগত করেনি কেন্দ্রকে। আর সেই কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েই চিঠি এসেছে রাজ্য। যদিও সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে রাজ্যের চাহিদা মতই কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠান হচ্ছে রাজ্যে।
আরও পড়ুনঃ
BJP: ভোটের আগেই বড় পরিবর্তন বিজেপির অন্দরে, চার রাজ্যের সভাপতি বদল গেরুয়া শিবিরে
সায়নী ঘোষের লুক পরিবর্তন, অভিনেত্রী থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে সঙ্গী বড় টিপ আর খোঁপা