মহাকরণের বাইরেও বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে স্লোগান, ধরনা, অবস্থান করেন বিক্ষুব্ধ সরকারি কর্মী।
বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রের সমান হারে মহার্ঘভাতার দাবিতে রাজ্য জুড়ে আজ ধর্মঘটের ডাক রাজ্যের সরকারি কর্মচারিদের। ইতিমধ্যেই ধর্মঘট নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নবান্ন। আজ প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বলেও জানিয়েছে নবান্নর পক্ষ থেকে। তবে প্রশাসনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দমেনি আন্দোলন। শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় দেখা গিয়েছে ধর্মঘটের প্রভাব। একাধিক সরকারি অফিসে কর্মচারিদের একাংশ কাজ বন্ধ করে ব্যানার পোস্টার হাতে বিক্ষোভে সামিল হয়েছে। মহাকরণের বাইরেও বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে স্লোগান, ধরনা, অবস্থান করেন বিক্ষুব্ধ সরকারি কর্মী। এছাড়াও ধর্মঘটের জের দেখা দিয়েছে সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুল, কলেজগুলিতেও। যোগমায়া দেবী কলেজে সকাল থেকেই ক্লাস বন্ধ। পড়ুয়াদের সূত্রে খবর অধ্যাপকরা এলেও ক্লাস হবে না বলে জানানো হয়েছে। পঠনপাঠন বন্ধ সরকারি প্রাথমিক স্কুলেও শিক্ষকরা। এছাড়া প্রভাব দেখা দিয়েছে যান চলাচলের ক্ষেত্রেও। প্রভাব পড়েছে ফেরিঘাটেও। সকাল থেকে বন্ধ ফেরি চলাচল। সরকারি বাস ডিপোতেও ধর্মঘটের প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। বেশ কিছু রাস্তায় সরকারি বাসের সংখ্যা অন্যদিনের তুলনায় কম বলেই মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে আন্দোলন রুখতে আরও কড়া রাজ্য সরকার। সকাল ১১ টার মধ্যেই হাজিরা রিপোর্ট পাঠাতে হবে। হাজিরা খতিয়ে দেখবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারই এই নির্দেশ পৌঁছে যায় বিভিন্ন দফতরের সচিবদের কাছে। আন্দোলন উপেক্ষা করে কতজন হাজিরা দিল সে নথি শুক্রবার দেখবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কর্মীদের উপস্থিতির হার পাঠাতে হব নির্দিষ্ট ফরম্যাটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই এই ফরম্যাট পৌঁছে গিয়েছে দফতরে দফতরে। সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যেই উপস্থিতির হার জানা যাবে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন দফতর। ধর্মঘট নিয়ে বৃহস্পতিবারই নবান্নর তরফে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে শুক্রবার প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। কিন্তু ধর্মঘট ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। ওদিন সমস্ত সরকারি কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিক থাকে সেবিষয় হুঁশিয়ারি দিল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এই মর্মে অর্থ দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে শুক্রবার ছুটি পাবেন না কোনও কর্মী। স্কুল কলেজ-সগ যাবতীয় সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত প্রতিষ্ঠানও শুক্রবার পূর্ণ দিবস খোলা থাকবে বলেও এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে একমাত্র কোনও কর্মচারী যদি আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন অথবা হসপাতালে ভর্তি থাকেন একমাত্র সে ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতার দাবিতে সরক রাজ্যের সরকারী কর্মীরা। একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিলেন তাঁরা। একমাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি দফতর। এদিকে ধর্মঘটের বিরোধিতায় কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন। বিজ্ঞপ্তি সত্ত্বেও আন্দোলনে অনড় সরকারী কর্মীরা। এই আবহে এবার আন্দোলনকারীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি বলেছেন,'আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব।' এখানেই শেষ নয় ধর্মতলায় অনশনরত কর্মীদের জন্যও বিশেষ বার্তা দেন তিনি। রাজ্যপালের কথায়,'সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অনশন করছেন কিছু মানুষ। আমি খুবই ব্যথিত। এইভাবে ডিএ নিয়ে অনশন চললে, একের পর এক সরকারি কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়বেন। মানুষের পরিষেবা ব্যহত হবে। আশা রাখি সকলে মিলে দ্রুত এর সমাধান বেরোবে।'
আরও পড়ুন -
ডিএ-এর দাবিতে ধর্মঘট রুখতে এবার তলব হাজিরা রিপোর্ট, তদারকিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী
বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ধর্মঘট রুখতে কড়া পদক্ষেপ প্রশাসনের, প্রকাশিত হল বিজ্ঞপ্তিও