সংক্ষিপ্ত
আন্দোলনকারীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘভাতার দাবিতে সরক রাজ্যের সরকারী কর্মীরা। একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিলেন তাঁরা। একমাত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি দফতর। এদিকে ধর্মঘটের বিরোধিতায় কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন। বিজ্ঞপ্তি সত্ত্বেও আন্দোলনে অনড় সরকারী কর্মীরা। এই আবহে এবার আন্দোলনকারীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি বলেছেন,'আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব।' এখানেই শেষ নয় ধর্মতলায় অনশনরত কর্মীদের জন্যও বিশেষ বার্তা দেন তিনি। রাজ্যপালের কথায়,'সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে অনশন করছেন কিছু মানুষ। আমি খুবই ব্যথিত। এইভাবে ডিএ নিয়ে অনশন চললে, একের পর এক সরকারি কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়বেন। মানুষের পরিষেবা ব্যহত হবে। আশা রাখি সকলে মিলে দ্রুত এর সমাধান বেরোবে।'
অন্যদিকে আন্দোলন রুখতে আরও কড়া রাজ্য সরকার। সকাল ১১ টার মধ্যেই হাজিরা রিপোর্ট পাঠাতে হবে। হাজিরা খতিয়ে দেখবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারই এই নির্দেশ পৌঁছে যায় বিভিন্ন দফতরের সচিবদের কাছে। আন্দোলন উপেক্ষা করে কতজন হাজিরা দিল সে নথি শুক্রবার দেখবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কর্মীদের উপস্থিতির হার পাঠাতে হব নির্দিষ্ট ফরম্যাটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই এই ফরম্যাট পৌঁছে গিয়েছে দফতরে দফতরে। সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যেই উপস্থিতির হার জানা যাবে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন দফতর। ধর্মঘট নিয়ে বৃহস্পতিবারই নবান্নর তরফে জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে শুক্রবার প্রশাসনিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। কিন্তু ধর্মঘট ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। ওদিন সমস্ত সরকারি কাজকর্ম যাতে স্বাভাবিক থাকে সেবিষয় হুঁশিয়ারি দিল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এই মর্মে অর্থ দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়ে শুক্রবার ছুটি পাবেন না কোনও কর্মী। স্কুল কলেজ-সগ যাবতীয় সরকারি ও সরকার পোষিত সমস্ত প্রতিষ্ঠানও শুক্রবার পূর্ণ দিবস খোলা থাকবে বলেও এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে একমাত্র কোনও কর্মচারী যদি আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন অথবা হসপাতালে ভর্তি থাকেন একমাত্র সে ক্ষেত্রে ছুটি মঞ্জুর হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকালে খড়গপুরে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে চা-চক্রে যোগ দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেই ডিএ-এর ইস্যুতে সরকারি কর্মীদের সমর্থন করে তিনি বলেন,'সরকারি কর্মচারীরা তো আগেই জানিয়েছিল যে তাঁরা ধর্মঘটে যাবেন। প্রন ডাউন করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন তিনি দাবি মানবেন না। সংঘর্ষ বাড়বেই।' প্রসঙ্গত এর আগেও ডিএ আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন দিলীপ। সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, শহীদ মিনারের নীচে ডিএ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে যান শুভেন্দু অধিকারী। বিনা শর্তে সরকারি কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন তিনি। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী আগেই বলেছিলেন,'রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ তৃণমূল সরকারের বিসর্জন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বঞ্চিত থাকবে।' পাশাপাশি তিনি আরও বলেছিলেন,'ডিএ-এর দাবিতে বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন করে কোনও লাভ নেই। স্বাস্থ্য দফতরের মতো জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে সমস্ত স্তরের রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বলব সব জায়গায় তালা লাগিয়ে রাস্তায় নামুন। বদলির ভয় পেলে চলবে না। সরকারের বিরুদ্ধে বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের মহার্ঘ ভাতার বিস্তর ফারাক দিন দিন বেড়েই যাবে।'
আরও পড়ুন -
ডিএ-এর দাবিতে ধর্মঘট রুখতে এবার তলব হাজিরা রিপোর্ট, তদারকিতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী
বকেয়া ডিএ-এর দাবিতে ধর্মঘট রুখতে কড়া পদক্ষেপ প্রশাসনের, প্রকাশিত হল বিজ্ঞপ্তিও