বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলা যাওয়া নিয়ে ফের আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। নজিরবিহীন ভাবে মামলা বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাস থেকে সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার (West Bengal Govt)।
কলকাতা: গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (GTA Recruitment Scam) মামলার বিচার ভার ফের এসে পড়ল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High COurt) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে। রাজ্যের আপত্তি থাকায় সম্প্রতি এই মামলার বিয়ার থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Calcutta High Court Justice)। কিন্তু রাজ্য সরকারের আপত্তি টিকল না ধোপে। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের নির্দেশে মামলা ফের ফিরে আসে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে।
জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে মামলা যাওয়া নিয়ে ফের আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার। শুধু তাই নয়, নজিরবিহীন ভাবে মামলা বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাস থেকে সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের কাছে আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার (West Bengal Govt)।
সূত্রের খবর, গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে তালিকায় নাম রয়েছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), তৃণমূল নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ হাবরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা বুবাই বোস, স্কুল পরিদর্শক প্রাণগোবিন্দ সরকার। নাম রয়েছে, বিনয় তামাংয়ের। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হিসেবে নাম উঠে এসেছে রাজন্যা হালদারের স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তীরও। এদের প্রত্যেকের নামে থানায় FIR দায়ের হয়। জানা গিয়েছে, তারপরেও কেন অভিযুক্তদের কোনওরকম জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না বলে এর আগের শুনানিতে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
২০২৪-এর জানুয়ারিতে এই বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। জিটিএ-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একটি বেনামি চিঠিও সামনে আসে। যা ডিআইজি, সিআইডি ও ভিজিল্যান্স কমিটিকে পাঠায় শিক্ষা দফতর। যদিও তারপরেও নেওয়া হয়নি কোনও পদক্ষেপ। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা উচ্চ বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। যদিও সেখানেও ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে সিবিআইকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশই বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
অন্যদিকে এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল যে, রাজ্য পুলিশও এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। তবে ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) যায় রাজ্য সরকার (West Bengal) সেখানেও সিবিআই তদন্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। যদিও আগের শুনানিতে মামলার তদন্তের অগ্রগতি কতদূর জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই সংক্রান্ত রিপোর্টের সঠিক উত্তর না মেলায় আগেরবার মামলা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বিচারের দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সব মিলিয়ে এখন দেখার গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জল কতদূর গড়ায়।