
গাইঘাটা: পুলিশ কনেস্টেবলের পোশাক বানিয়ে সেই পোশাক পরে বিভিন্ন যায়গায় ঘোরাঘুরি করত যুবক। নিজেকে এলাকায় পুলিশ বলে পরিচয় দিত। পুলিশের পোশাক পরে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করত। অবশেষে পুলিশের জালে ভুয়ো 'পুলিশ কনেস্টেবল'। মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম অঙ্কিত ঘোষ। বাড়ি গাইঘাটা থানার শিমুলপুর চৌরঙ্গী এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি গাইঘাটা থানার পুলিশের কাছে খবর আসে গাইঘাটা চৌরঙ্গী এলাকার এক যুবক পুলিশের পরিচয় দিয়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। খবর পেয়ে অঙ্কিতের গতিবিধির উপরে নজর রাখছিল গাইঘাটা থানার পুলিশ। তার গতিবিধিতে সন্দেহ হয়। এরপর অঙ্কিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গাইঘাটা থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে তার কথায় একাধিক অসঙ্গতি দেখা যায়। তখন পুলিশ তার কাগজপত্র দেখতে চায়। কিন্তু পুলিশে চাকরি করার মত কোনও নথি সে দেখাতে পারেনি। পরবর্তীতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতের কাছ থেকে একাধিক পুলিশের পোশাক, নেম প্লেট সহ একাধিক ভুয়ো নথি উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের খবর, পরিবারকে সে জানিয়েছিল পুলিশের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিল। তারপরে তাদের জানায় সে চাকরি পেয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন বাড়ি থেকে পুলিশের পোশাক পরে ডিউটিতে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরোতে। বিকাশ ভবনে পোস্টিং রয়েছে বলে পরিবার জানত। পুলিশি তদন্তে প্রকাশ্যে আসল তথ্য। জানা গেল, সবটাই মিথ্যা।
অন্যদিকে, কসবা ল কলেজের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে জেরায় পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনিয়র ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিতে মাস্টার মাইন্ড ছিল এই মনোজিৎ মিশ্র ওরফে ম্যাঙ্গো। মহিলাদের উত্যক্ত করা, তাদের কম্প্রোমাইজ করিয়ে ব্ল্যাকমেল করে ভিডিয়ো তুলতে বাাধ্য করত সে। এমনকি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সে দিনের পর দিন এই কাজ করে গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, তার এই কাজে মূল শাগরেদ ছিল জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়। পুলিশি জেরায় এই দুজন স্বীকার করেছে যে, তারা ম্যাঙ্গো দাদার নির্দেশে এই সমস্ত ভিডিয়ো তুলত এবং সেগুলি বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাঠাত তারা। এছাড়াও কলেজে বছরের দুবার পিকনিকের আয়োজন করত মনোজিৎ। আর ওই পিকনিক থেকেই জুনিয়রদের মাঝে 'শিকার' খুঁজত মনোজিৎ। পিকনিক থেকেই কোন ছাত্রীকে তুলবে সেই টার্গেট ফিক্স করে ফেলত ম্যাঙ্গো। এরপর ম্যাঙ্গো দাদার নির্দেশেই বাকি কাজ করত শাগরেদ জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, পিকনিকে টার্গেট হওয়া ছাত্রীকে দাদার পাশে বসানো থেকে, জায়গা ঠিক করে দেওয়া, অশালীন ভিডিয়ো রেকর্ড করা এই সমস্ত কিছুর দায়িত্ব ছিল জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের কাঁধে। এমনকি মনোজিৎ পিকনিকে আকণ্ঠ মদ্য পান করে অশালীন আচরণ করত।
এরপর পিকনিকের সেই সব কুকীর্তির ভিডিয়ো দেখিয়ে চলত ব্ল্যাকমেলের কাজ। ছাত্রীর বাড়িতে ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়ার ভয়, চলত পরীক্ষায় ফেইল করিয়ে দিয়ে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি। লোকলজ্জার ভয়ে শেষপর্যন্ত মনোজিতের যৌন হেনস্তার শিকার হতেন জুনিয়র ছাত্রীরা। আর নির্যাতিতার অভিযোগ দায়েরের পর এবার অনেকেই সাহস করে প্রকাশ্যে আনছে মনোজিৎয়ের একের পর এক কুকীর্তি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।