
বড়বাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গ্রেফতার ঋতুরাজ হোটেলের মালিক ও ম্যানেজার। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে হোটেল মালিক আকাশ চাওলা ও ম্যানেজার গৌরব কাপুরকে।
বুধবার রাতে এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছে দমকল। পাশাপাশি সুয়ো মোটো দায়ের করে পুলিশ। এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং দমকলের-ডিজি সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
জানা গিয়েছে মৃত ১৪ জনের মধ্যে প্রায় সকলেই ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। কলকাতার বড়বাজারের হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত ১৪। মৃতদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা। বাকি ২জন শিশু বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন আগুন লেগেছে তাই গঠন করা হয়েছে সিট।
পুলিশ মারফত জানা গিয়েছে ১৪ জনের মধ্যে ৮ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় আহতের সংখ্যা ১৩ জন। ১২ জনকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১ জন। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।
চলছে তদন্ত প্রক্রিয়া। বুধবার ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিশেষ ফরেনসিক দল। পুরো ঘটনাটি তাঁরা তদন্ত করে দেখবে বলে জানা গিয়েছে। বুধবার শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, "বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণেই এত জনের মৃত্যু হয়েছে। সারা রাত ধরে আমি উদ্ধারকাজের খোঁজখবর নিয়েছি। এলাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন করারও ব্যবস্থা করেছি। ঘটনার তদন্ত করা হবে। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সহমর্মিতা রইল।"
মঙ্গলবার সন্ধে সাড়ে ৭ টা নাগাদ এই ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ১০ ইঞ্জিন। পরে প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল হোটেলের ৪২টা ঘরে। মোট ৮৮ জন ছিলেন ওই হোটেলে।
যে রাস্তায় আগুন লেগেছে সেটি হল সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং বিধান সরণির সংযোগকারী। এই রাস্তাটি তুলনামূলক ভাবে বেশ অনেকটাই ঘিঞ্জি। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। ঘটনাস্থলে ভোর ৩টে পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা এবং রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।
এরমধ্যে পাসোয়ান নামে একজন আগুন থেকে নিজেকে বাঁচাতে উপর থেকে নিচে ঝাঁপ দেন। পরে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং বিধান সরণির সংযোগকারী এই রাস্তায় এই হোটেল। রাস্তাটি বেশ ঘিঞ্জি। যে হোটেলে আগুন লেগেছে তার আশপাশে প্রচুর দোকান ও বাড়ি রয়েছে। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। তার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। ঘটনাস্থলে ভোর ৩টে পর্যন্ত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা এবং রাজ্যের নারী এবং শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।
পুলিশ সূত্রে খবর, আনন্দ পাসোয়ান নামে এক ব্যক্তি আগুন থেকে বাঁচতে হোটেলের কার্নিস থেকে নীচে ঝাঁপ দেন। আহত অবস্থায় তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রবল ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি ‘গ্যাসচেম্বার’-এ পরিণত হয়। যার ফলে হোটেলের ভিতরে দমকল কর্মীরা ঢুকতে পারছিলেন না। তাঁরা মই দিয়ে চার ও পাঁচ তলার ঘরের জানলা ভেঙে সেখানে দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন। তার পর একে একে হোটেলের আবাসিকদের উদ্ধার করেন।
আতঙ্কিত হয়ে বেশ কয়েক জন হোটেলের কার্নিসে চলে আসেন। দমকলের মই দিয়ে তাঁদেরকে নামানো হয়। জানা গিয়েছে, হোটেলে ছিলেন এ রাজ্যের এবং ভিন্রাজ্যের বাসিন্দারা।