
সিনেমার গল্পকেও এই ঘটনা পিছনে ফেলে দেবে। সিঁদুর দান হয়ে যাওয়ার পর নববধূ বলে বসলেন তিনি এখানে স্ত্রীধর্ম পালন করতে পারবেন না। কারণ শুনে মাথা ঠিক রাখতে পারছিলেন না স্বামী। তারপরই নিয়ে ফেলেন এই কড়া সিদ্ধান্ত, আর তাতেই মাথায় হাত বিয়ে বাড়ির সকলের। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বীরভূমের কীর্ণাহারের এক যুবকের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার এক তরুণীর বিয়ে হয় ধুমধাম করে। জমকালো আয়োজনে সম্পন্ন হলেও, শেষ পর্যন্ত তা পরিণতি পেল বিচ্ছেদে। বিয়ের লগ্ন ছিল ভোর ৫টায়। নিয়ম মেনে সিঁদুরদানের পরই কনে বরকে জানান, তাঁর প্রেমিক রয়েছে এবং তিনি এই বিয়েতে সুখী নন। এই ঘটনায় হতবাক বর ও তাঁর পরিবার।
পাত্রের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বীরভূমের ওই যুবক ভারতীয় সেনায় কর্মরত। তাঁর বয়স ২৫ বছর। পাত্রীর বয়স ১৯ বছর। দুই পরিবারের সম্মতিতে গত বৃহস্পতিবার বিয়ে হয়। বিয়ের আগের দিন রাতে বরযাত্রী নিয়ে বড়ঞায় যান ওই যুবক। শুক্রবার ভোরে বিয়ের লগ্ন ছিল। সেই মতো বিয়েও সম্পন্ন হয়। অভিযোগ, সিঁদুরদানের পর নববধূ বরকে আলাদা করে ডেকে নিয়ে যান এবং জানান, তাঁর প্রেমিক রয়েছে। তিনি তাঁকে ভালোবাসেন। তাই এই বিয়েতে তিনি খুশি নন। এই কথা শুনে হতবাক হয়ে যান ওই সেনাকর্মী। তিনি বুঝতে পারেন, কাজে ফিরে যাওয়ার পর এই বিয়ে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এরপরই ওই যুবক কড়া পদক্ষেপ করেন। নববধূকে নিয়ে বড়ঞা থানায় যান এবং লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ জানায়, পাত্র-পাত্রী সাবালক হওয়ায় বিষয়টি কান্দি মহকুমা শাসকের দফতরে পাঠানো হয়। সেখানে নববধূ বাড়িতে ফিরতে না চেয়ে সরকারি হোমে যাওয়ার আবেদন জানান। সেই মতো মহকুমা শাসক তাঁকে খড়গ্রামে সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রেম থাকা সত্ত্বেও কেন জোর করে বিয়ে দেওয়া হল? নববধূর জীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা কতটা জরুরি? পারিবারিক অশান্তি এড়াতে আইনি পদক্ষেপ কতটা জরুরি? এই ঘটনাটি কিন্তু সমাজে একটি বড় প্রশ্ন চিহ্ন রেখে গেল।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।