
বর্ষাকাল মানেই জলজট, নদী-খাল-পুকুরে জলভর্তি, আর সেইসঙ্গে বাড়তে থাকে জলে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই ছবিটা আরও উদ্বেগজনক। প্রতিদিন প্রায় ২৫ জন মানুষ জলে ডুবে প্রাণ হারান, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ জলে ডুবে মারা যান, যার ১৮% মৃত্যু ঘটে ভারতে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। এই উদ্দেশ্যেই চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউট (CINI) রাজ্যে চালাচ্ছে একাধিক প্রকল্প, যার অন্যতম উদাহরণ সুন্দরবনের ‘কবচ সেন্টার’।
দুপুর ১২টা থেকে ২টা— এই মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই ঘটে সর্বাধিক দুর্ঘটনা। এর মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর— এই পাঁচ জেলায় দুর্ঘটনার হার সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি কলকাতার রোটারি সদনের এক অনুষ্ঠানে চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউট (সিনি)-র প্রতিষ্ঠাতা ডঃ সমীর চৌধুরী তুলে ধরলেন এই পরিসংখ্যান।
এই বিপদ প্রতিরোধে সিনি-র ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি অফিসার সুজয় রায় বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে কীভাবে শিক্ষা নিয়ে জলে ডোবার মতো দুর্ঘটনা এড়ানো যায় তা নিয়ে কথাও বলেন। সিনি-র উদ্যোগে সুন্দরবনে শুরু হওয়া ‘কবচ সেন্টার’ তৈরি ও সেখানকার কাজের অগ্রগতিও প্রকাশ্যে আনলেন সিনি-র প্রতিষ্ঠাতা।
CINI-র উদ্যোগে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপসমূহ
সংস্থার উদ্যোগে গত দেড় বছরে ৭২টি শিশু নিরাপদভাবে স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া স্থানীয় পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় বিপজ্জনক পুকুরগুলির পাড় সংস্কার করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে, ফলে ১০০টিরও বেশি শিশুর প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যের নানা প্রান্তে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে নেওয়া হয়েছে ৭৫টিরও বেশি কর্মসূচি।
বিশ্ব জলে ডোবা প্রতিরোধ দিবসের ভূমিকা
প্রতি বছরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্ব জলে ডোবা প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। এবছর এই দিবসের বার্তা ছিল ‘আপনার গল্পই বাঁচাতে পারে একটি প্রাণ’। সম্প্রতি এক ডুবন্ত শিশুকে উদ্ধারের জন্য রাজ্য পুলিশের দুই প্রতিনিধিকে সম্মানিত করে সিনি। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস, অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মহঃ ওয়াকিবুল্লা মোল্লা প্রমুখ।