ব্যাবসার বড় ক্ষতি করে দিয়েছে ছেলে। বীরভূমের বাড়িতে বসে ছেলের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুললেন জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা বিশ্বনাথ সাহা।
ঘুষ দেওয়া থেকে মারধর করা। এমনকি জেলে পুরে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ছেলের বিরুদ্ধে সরব হলেন বাবা। মুর্শিদাবাদের বড়োঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হওয়ার পরেই ছেলের বিরুদ্ধে রীতিমত বোমা ফাটালেন বাবা। ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী ও পরিবার নিয়ে যে বীরভূমে চলে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানেই স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি তাঁর ছেলে। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন জীবনের বাবা বিশ্বনাথ সাহা।
ছেলের দুর্নীতির দায় নেবেন না। সাঁইথিয়ার বাড়িতে বসে একথা জানিয়ে দিলেন সিবিআইয়ের হাতে ধৃত মুর্শিদাবাদের বড়ঞা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাবা বিশ্বনাথ সাহা। উল্টে ছেলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া এবং নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্বনাথবাবু।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সোমবার সকালে সিবিআই গ্রেফতার করেছে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে। বর্তমানে তাঁর বাবা থাকেন বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের লাউতোরে। অভিযোগ ছেলের অত্যাচারেই সাঁইথিয়া পালিয়ে আসেন বিশ্বনাথবাবু। কিন্তু তাতেও ছেলের অত্যাচার থেকে রেহাই পাননি তিনি। বিশ্বনাথবাবু বলেন, কয়েক বছর ধরে ছেলের সঙ্গে কোন সম্পর্ক নেই। তারপরও আমার ব্যবসায় অনেক ক্ষতি করেছে। ব্যবসা বন্ধের হুমকি দিয়ে গিয়েছিল। মিড ডে মিলের একটি চাল ডাল সরবরাহের দায়িত্ব বিডিও অফিসের মাধ্যমে পেয়েছিলাম। কিন্তু ছেলে মোটা টাকা ঘুষ নিয়ে আমার সেই অর্ডার বাতিল করিয়েছে। এমনকি সাঁইথিয়ায় এসে আমাকে মারধর করে গিয়েছিল। জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গিয়েছিল দিন সাতেক আগে।
জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথবাবুর জন্মভিটে মুর্শিদাবাদের আন্দি গ্রামে। তিনি প্রথম বিয়ে করেন বেলারাণী সাহাকে। প্রথম পক্ষের দুই মেয়ে এক ছেলে। এরই মধ্যে বিশ্বনাথবাবু দ্বিতীয় বিয়ে করেন গায়েত্রী সাহাকে। এনিয়ে অশান্তি শুরু হওয়ায় দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের আন্দির পাট চুকিয়ে সাঁইথিয়া চলে আসেন। সেখানেই রাইস মিল করে ব্যবসা শুরু করেন। আন্দির বাড়িতে জীবনকৃষ্ণ সাহা তারা মা বেলারানী সাহা এবং দুই বোনকে সঙ্গে নিয়ে থাকতেন। দ্বিতীয় পক্ষের দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে কয়েক বছর আগে সাঁইথিয়া-রামপুরহাটের মাঝে রেল লাইন থেকে ছেলের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সাঁইথিয়া শহরেই থাকেন জীবনকৃষ্ণর পিসি মায়ারানী সাহা। তিনি সাঁইথিয়া পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। জীবনকৃষ্ণ ওই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বলে জানিয়েছেন বাবা বিশ্বনাথবাবু। যদিও সেই কথা স্বীকার করেনি মায়ারানী সাহার ঘনিষ্টরা। তবে পিসির বাড়িতে কেউ না থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।