বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকা। ফের শুরু হয় পুলিশ বনাম বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। বিক্ষোভকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ।
মঙ্গলবার ফের উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জ। রাজবংশী কিশোরীর ধর্ষন ও খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতারি ও কঠোর শাস্তির দাবিদে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামে তফসিলি ও আদিবাসী সংগঠন গুলির সমন্বয় কমিটি। ফের পুলিশের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ শুরু হয় আন্দোলনকারীদের। কালিয়াগঞ্জ থানার সামনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি পাঁচিলও। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে কালিয়াগঞ্জ কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকা। ফের শুরু হয় পুলিশ বনাম বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। বিক্ষোভকারীদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে পুলিশ। মঙ্গলবার কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় এলাকা।
মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছল বের করে রাজবংশী তফসিলি ও আদিবাসী সংগঠন। কালিয়াগঞ্জ থানার সামনে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ছোড়া হয় ইট পাটকেলও। এমনকী পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইট ছোড়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেলও ফাটানো হয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা গ্রামের বাসিন্দা কিশোরী। এলাকারই এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে নাবালিকা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর আর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হন। সেখানেই তারা জানতে পারে নাবালিকা তার প্রেমিকের সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় কিশোরীর নিথর দেহ।
শনিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিজেপির প্রতিনিধি দল। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এদিন সাহেবঘাটা পৌঁছন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী, উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, ইংরেজ বাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী-সহ বিজেপির একাধিক রাজ্য প্রতিনিধি দল। গোটা ঘটনাকে পুলিশের চূড়ান্ত ব্যর্থতার ফল বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি। চোপড়ার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেও পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে দুষলেন সুকান্ত। তাঁর দাবি চোপড়ায়ও একই ধাঁচে আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন এক রাজবংশী মেয়ে। সেক্ষেত্রেও আত্মহত্যার তত্ত্ব খাড়া করেছিল পুলিশ। একই ধাঁচে বারবার অপরাধ সংগঠিত হওয়া সত্ত্বেও ঠিকভাবে তদন্ত করছে না পুলিশ। এখানেই শেষ নয় প্রতিটি ঘটনা ধামাচাপা দেওয়াতে কালিয়াগঞ্জের আইসির ভূমিকা আছে বলেও দাবি করেন তিনি। অবিলম্বে আইসি এবং গ্রামের প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্তেরও দাবি তোলেন সুকান্ত।