
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) ঘোষণা করেছে যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযানের জন্য একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলে, দলের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তাদের চেয়ারপারসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনোনীত করেছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে, AITC বলেছে যে প্রতিনিধি দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দলের দৃঢ় অবস্থানকে তুলে ধরে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে, "আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের চেয়ারপারসন, শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযানের জন্য সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনোনীত করেছেন। যখন বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের ক্রমবর্ধমান হুমকির মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তি আলোচনায় দৃঢ়তা এবং স্পষ্টতা আনবে। তার উপস্থিতি কেবল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলার দৃঢ় অবস্থানের কথাও তুলে ধরবে না, বরং বিশ্ব মঞ্চে ভারতের সামগ্রিক কণ্ঠস্বরকেও শক্তিশালী করবে," এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে।
সাতটি দলের সমন্বয়ে গঠিত বহু-দলীয় প্রতিনিধি দল, যার প্রত্যেকটির নেতৃত্বে একজন করে সাংসদ রয়েছেন, বিশ্বে ভুল তথ্যের মোকাবেলা এবং সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে ভারতের শূন্য-সহনশীলতার নীতি তুলে ধরার জন্য শুরু করা হয়েছে। তালিকায় বহু-দলীয় গোষ্ঠীর সংসদ সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের ৮-৯ জন সদস্যের সাতটি দলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি দলের জন্য একজন নেতা নিযুক্ত করা হয়েছে যিনি বিশ্বের একাধিক দেশে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু শনিবার তালিকাটি পোস্ট করার সময়, সংসদ সদস্যরা কীভাবে "এক মিশন। এক বার্তা। এক ভারত।" এর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান দেখিয়েছেন তাও তুলে ধরেছেন। "এক মিশন। এক বার্তা। এক ভারত। সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল শীঘ্রই অপারেশন সিন্দুরের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করবে, যা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সামগ্রিক সংকল্পকে প্রতিফলিত করে। এখানে এই ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্টের প্রতিনিধিত্বকারী সাংসদ এবং প্রতিনিধি দলের তালিকা," রিজিজু এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছেন।
ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বে ১ নম্বর দল সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন এবং আলজেরিয়া সফর করবে। আরও তিনজন বিজেপি সাংসদ--নিশিকান্ত দুবে, ফাংনন কোন্যাক, রেখা শর্মা এই দলের অংশ। AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গোলাম নবী আজাদ, মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য সতনাম সিং সান্ধু এবং প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ শ্রিংলা এই দলের অংশ হবেন।
বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে ২ নম্বর দল ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ডেনমার্ক এবং অন্যান্য সহ কিছু ইউরোপীয় দেশে যাবে। বিজেপির দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী এবং শমীক ভট্টাচার্য, শিবসেনা (UBT) এর প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য গোলাম আলী খাতানা, কংগ্রেসের অমর সিং, প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর এই দলের অংশ হবেন।
জনতা দল (ইউনাইটেড) এর জাতীয় কার্যকরী সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝার নেতৃত্বে ৩ নম্বর দল। নয় সদস্যের দলটি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, জাপান এবং সিঙ্গাপুর সফর করবে। বিজেপির অপরাজিতা সারঙ্গী, ব্রিজ লাল, প্রদান বড়ুয়া, হেমাং জোশী, তৃণমূল কংগ্রেসের ইউসুফ পাঠান, CPI(M) এর জন ব্রিটাস, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সালমান খুরশিদ এবং মোহন কুমার এই দলের অংশ।
৪ নম্বর দলের নেতৃত্ব দেবেন শিবসেনা সাংসদ শ্রীকান্ত একনাথ শিন্ডে, যিনি সংযুক্ত আরব আমির আমিরশাহী , লাইবেরিয়া, কঙ্গো এবং সিয়েরা লিওন সফর করবেন। বিজেপির বনশ্রী স্বরাজ, অতুল গর্গ, মনন কুমার মিশ্র, বিরোধী সদস্যদের মধ্যে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের সাংসদ মোহাম্মদ বাশির, বিজেডির সস্মিত পাত্র এবং সুজন চিনয় এই দলের অংশ হবেন।
কংগ্রেসের শশী থারুরের নেতৃত্বে ৫ নম্বর দল, তাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পানামা, গায়ানা, ব্রাজিল এবং কলম্বিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে। বিজেপির শশাঙ্ক মনি ত্রিপাঠী, ভুবনেশ্বর কলিতা এবং তেজস্বী সূর্য, LJP (রাম বিলাস) এর শম্ভবী চৌধুরী, TDP এর জিএম হরিশ বালায়োগী, শিবসেনার মিলিন্দ দেওরা, JMM এর সরফরাজ আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তরণজিৎ সিং সান্ধুর সঙ্গে থাকবেন।
DMK সাংসদ কানিমোঝি করুণানিধির নেতৃত্বে ৬ নম্বর দল স্পেন, গ্রীস, স্লোভেনিয়া, লাটভিয়া এবং রাশিয়া ইউরোপীয় দেশগুলির দ্বিতীয় দলে যাবে। সমাজবাদী পার্টির রাজীব রাই, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মারিয়া আলতাফ আহমেদ, বিজেপির ব্রিজেশ চৌটা, RJD এর প্রেম চাঁদ গুপ্ত, AAP এর অশোক কুমার মিত্তল মনজীব এস পুরি এবং জাভেদ আশরাফের সঙ্গে থাকবেন।
NCP (SCP) সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে নেতৃত্বে ৭ নম্বর দল মিশর, কাতার, ইথিওপিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করবে। বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডি, অনুরাগ সিং ঠাকুর, ভি মুরলীধরন কংগ্রেসের মনীশ তিওয়ারি, আনন্দ শর্মা, TDP এর লাভু শ্রী কৃষ্ণ দেবরায়লু, AAP এর বিক্রমজিৎ সিং সাহনি এবং রাষ্ট্রসংঘে ভারতের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শূন্য-সহনশীলতার নীতি তুলে ধরবেন।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে ৭ মে অপারেশন সিন্দুর শুরু হয়েছিল।