
সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের রায়ে চাকরি বাতিল হয়েছে রাজ্যের ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকার। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের জনসভা থেকে এসএসসির রায়দান নিয়ে এবারও উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ২৬ হাজারের চাকরি বাতিল হয়েছে। এত শিক্ষক অশিভক্ষক কর্মীর চাকরি চলে যাওয়ায় বাংলা এবার স্কুল বন্ধ করে দিতে হবে কিনা সেই প্রশ্নও করেন মমতা।
কিন্তু ২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। বলা হয়েছে সুদে আসতে বেতনও ফেরত দিতে হবে। এতে আমার খারাপ লেগেছে। ' তবে মমতার এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলেছে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতেই এই মন্তব্য। বিরোধীদের দাবি দুর্নীতি সম্পর্কে তিনি অজ্ঞাত ছিলেন সেটাজানতে এই মন্তব্য করেছেন।
মমতা এদিন বিরোধীদেরও নিশানা করেন। বলেন, যারা সরকারি চাকরি করেন তাদের সারা জীবন চাকরির পরে যদি চাকরি নিয়ে নিয়ে বলা হয় সমস্ত টাকা সুদে আসলে ফিরত দিতে হবে। সেটা কি সম্ভব। এদিন মমতা আবারও বলেন, তিনি রায় নিয়েই কথা বলছেন। বিচারপতিদের নিয়ে কিছু বলেছেন না। তিনি আরও বলেন, এভাবে কারও চাকরি খাওয়া যায় না। চাকরি নিয়ে তিনি মোদীকেও আক্রমণ করেন।
এদিন মমতা গলসিতেও সভা করেন। সেখান থেকে সরাসরি আক্রমণ করেন বর্ধমান -দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষকে। মমতা দিলীপের নাম না নিয়েই আক্রমণ করেন তাঁকে। বলেন দল তাঁকে খড়গপুরের টিকিট দেয়নি। সেখান থেকে এবার প্রার্থী করা হয়েছে। মমতা এদিন রাজ্য বিজেপির পাশাপাশি কেন্দ্র বিজেপির মধ্যেও বিভাজন তৈরি করতে চান। তিনি বলেন, রাজনাথ সিং বা নীতিন গডকরি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতে। তাতে তার কোনও আপত্তি থাকত না। একজন ভদ্রলোক দেশের প্রধানমন্ত্রী হত। মোদীর নাম না করেই তিনি বলেন যে দাঙ্গাবাজ প্রধানমন্ত্রী তিনি চান না।
মমতা এদিন বলেন, মোদীর পুরনো প্রতিশ্রুতিগুলি তুলে ধরে বিজেপিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, উনি বলেছিলেন ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবেন। বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এগুলি হয়নি। মমতা আরও বলেন, এই রাজ্যে তিনি সিএএ , এনআরসি, ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করতে দেবেনা। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করছে। কিন্তু তিনি এই বিভাজনের রাজনীতি রুখে দেবেন।
মমতা এদিন বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন যখন স্বাধীনতা হয়েছিল তখন বিজেপি ছিল না। বিজেপি স্বাধীনতা তুলে দিতে চাইছে বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বিএসএফ,সিআরপিএফ, রেলওয়ে- সবকিছুই বিজেপি নিজের মত করে দিয়েছে। বিজেপি ভোট না দিলে খুন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এবার যদি বিজেপি আসে তাহলে খাদ্য, দেশ বিক্রি করে দেবে। সব কিছু বন্ধ করে দেবে। এদিনও মমতা ১০০ দিনের টাকা কেন্দ্র দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন রাজ্য সরকার কর্মশ্রী প্রকল্প শুরু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা রয়েছে।