
Nadia Crime News: ২০২৫ সালের শুরুটা একসঙ্গে হলেও শেষটা হলো মর্মান্তিক। নতুন বছরে নতুন স্বপ্ন শুরুর আগেই প্রেমিকার লাথিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল প্রেমিক। ঘটনার খবর চাউর হতেই তীব্র চাপানউতোর শুরু হয়েছে নদীয়ার র ধানতলা থানার আড়ংঘাটা রেল স্টেশনের কাছে, বহিরগাছি এলাকায়।
ভালোবাসা জীবন দেয়—এ কথা আমরা জানি। কিন্তু সেই ভালোবাসাই যে এভাবে প্রাণ কেড়ে নিতে পারে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই নির্মম সত্য—ঘটনাটি নদীয়ার ধানতলা থানার আড়ংঘাটা রেল স্টেশনের কাছে, বহিরগাছি এলাকায়। রেল লাইনের পাশে ঘর করে বউ ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে থাকতেন প্রায় ৫০ বছর বয়সী সাগর মণ্ডল। লেবারের কাজ, কখনও ভ্যান রিক্সা চালিয়ে কোনওমতে চলত সংসার।
অভিযোগ, কিছুদিন আগে সাগর মণ্ডলের বাড়ির কাছেই স্বামী ছেড়ে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ঘর করে থাকতে শুরু করেন শম্পা বিশ্বাস নামের এক মহিলা। অভাবের সংসার দেখে মানবিকতায় গলেছিল সাগরের মন। নিজের অল্প আয়ের মধ্য থেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। সেই সাহায্যই ধীরে ধীরে রূপ নেয় প্রেমের সম্পর্কে।
প্রায় ৫ বছর ধরে চলতে থাকে তাদের সম্পর্ক। সব জেনেও, নিজের সংসার থাকা সত্ত্বেও নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছিলেন সাগর। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে যায় ছবি। অভিযোগ, সাগর মণ্ডলের টাকাতেই শম্পা বিশ্বাস তার মেয়ের বিয়ে দেয়। এত কিছুর পরেও হঠাৎই সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান শম্পা। কিন্তু সাগর মণ্ডল তা মানতে পারেননি।
এর মধ্যেই অন্য রাজ্যে কাজে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন সাগর। এরপরেই শুরু হয় অশান্তি। অভিযোগ, প্রতিবেশী গোবিন্দ বিশ্বাসের বৌমার কাছে ফোন নম্বর আনতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলা বাঁধে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই, বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে—বাড়ির গলির মধ্যেই সাগর মণ্ডলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার প্রেমিকা শম্পা বিশ্বাস ও তার ছেলে শচীন বিশ্বাস।
পরিবারের অভিযোগ, শম্পা বিশ্বাস বারবার লাথি মারেন সাগর মণ্ডলের পুরুষাঙ্গে। তাতেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সাগর। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণী জে এন এম হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি—সেখানেই মৃত্যু হয় সাগর মণ্ডলের। ঘটনার পর সাগর মণ্ডলের পরিবার আড়ংঘাটা পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেশী গোবিন্দ বিশ্বাসকে আটক করে পুলিশ।
বুধবার সকালে টোটো করে পালানোর চেষ্টা করার সময় আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও পলাতক প্রেমিকা শম্পা বিশ্বাস ও তার ছেলে শচীন বিশ্বাস। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে আরংঘাটা পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ।ভালোবাসা, বিশ্বাস, সাহায্য—সব কিছুর শেষে এমন পরিণতি ভাবতেই পারছে না এলাকাবাসী।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।