মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একের পর এক জেলায় তুমুল অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। গত দু'দিন ধরে তুমুল উত্তেজনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে হিংসার ঘটনা রুখতে এবার হস্তক্ষেপ করল আদালত। মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একের পর এক জেলায় তুমুল অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। গত দু'দিন ধরে তুমুল উত্তেজনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য পুলিশকে সহযোগিতার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবারই এই নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
এদিন পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার ঘটনা নিয়ে বড় রায় দিলেন বিচারপতি মান্থা। প্রার্থীদের নির্বিঘ্নে মনোনয়নের ব্যবস্থা করার জন্য কাশীপুর এবং ভাঙড় থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। শুধু তাই নয় রাজ্যের অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রেঈ একই অভিযোগ এলে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পদক্ষেপ করবে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে মঙ্গলবারের পর বুধবারেও পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে গণ্ডোগোল লেগেই রইল। এদিনও ফের মনোনয়ন জমা ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ভাঙরে। গতকালের মত আজও একই ছবি দেখা গেল ভাঙরে। ১৪৪ ধারার মধ্যেই বাঁশ -লাঠি নিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়াল দুষ্কৃতিরা। বুধবার ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও মুহুর্মুহু বোমাবাজী ও গণ্ডোগোলর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকাজুড়ে। এমনকী সংবাদমাধ্যমকেও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। আইএসএফ-সহ মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিরোধী প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পুলিশের ভূমিকায়। তাঁদের দাবি এলাকায় দেখাই যাচ্ছে না পুলিশকে। এমকী পুলিশের সামনেই বাঁশ নিয়ে প্রার্থীদের তাড়া করারও অভিযোগ উঠেছে।
বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন জমা না দিতে পারে তার জন্য রাস্তাও অবরোধ করেছে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। বুধবার সকাল থেকেই অবরুদ্ধ বাসন্তী হাইওয়ে। এলাকায় বন্ধ যান চলাচল। বড়ালী থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত এলাকা প্রায় জনশূন্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙরের পরিস্থিতি নিয়ে সরব বিরোধীরাও। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে অবিলম্বে জেলাশাসক ও পঞ্চায়েত নির্বাচন আধিকারিকের হস্তক্ষেপ চাইছে বিরোধীরা। এই মর্মে চিঠিও দেওয়া হয়েছে সিপিআইএম এবং বিজেপির তরফেও।
এর আগে মঙ্গলবার মনোনয়ন জমা দেওয়া ঘিরে তীব্র সংঘর্ষ বাঁধে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এবং তৃণমূলের মধ্যে। আইএসএফ-এর মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বচসা। এরপরই বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে ঘটনাস্থলে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্থানীয় পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও ইট ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে। ফলত প্রাথমিকভাবে পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ।
সূত্রের খবর সোমবার ভাঙর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে আইএসএফ কর্মীদের বাধা দেয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। পুলিশ সূত্রে খবর মঙ্গলবার ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজার এলাকায় সংঘর্ষ বাঁধে দু'পক্ষের মধ্যে। চলে তীব্র বোমাবাজি। মুহুর্মুহু পড়তে থাকে বোমা। সাত রাউন্ড গুলিও চলেছে বলে জানা যাচ্ছে। গোটা ঘটনার জন্য দু'পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে।