পরিবারের অভিযোগ, শুধু বোমাবাজি নয় গুলিও চালানো হয়েছিল। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
কর্মিসভা থেকে ফেরার সময় তৃণমূল কর্মীদের উপর বোমাবাজির অভিযোগ উঠল। বোমার আঘাতে তৃণমূল সমর্থকের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভোট সন্ত্রাস থেকে রেহাই পেল না কিশোরও। খোদ বাবার সামনেই বোমার আঘাতে প্রাণ গেল সেই কিশোরের। আর এই নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই গত ২৬ দিনে মৃত্যু হল ১৬ জনের!
জানা গিয়েছে নিহত ছাত্র দেগঙ্গার সোয়াই কুমারপুর পরশমণি শিক্ষাবিতান স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। বাবা তৃণমূলের সমর্থক। মঙ্গলবার সন্ধেয় তৃণমূলের মিছিলে গেছিল বাবা-ছেলে। সেখান থেকে ফেরার পথেই হামলা চলে বলে অভিযোগ। মৃত স্কুল পড়ুয়ার বাবা ইমদাদুল হক বলেন, “তখন আমাদের একটা মিছিল মতো ছিল, শেষ হয়ে গেছে। হঠাৎ আক্রমণ। বোমা মেরেছে। গুলির আওয়াজও এসেছিল।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে অতর্কিত আক্রমণ নেমে আসে স্কুল পড়ুয়া ইমরানের ওপরে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে বিশ্বনাথপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা। পরিবারের অভিযোগ, শুধু বোমাবাজি নয় গুলিও চালানো হয়েছিল। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে, এরপরে পাল্টা আক্রমণ চালায় তৃণমূলও। আইএসএফ এবং সিপিএমের কয়েকজন কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চলে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি ও খড়ের গাদা। পরিস্থিতি এতটাই তেতে ওঠে যে এলাকায় নামানো হয় RAF, চলে আসেন এসডিপিও। রাতেই বেশ কয়েকজন ধরে নিয়ে যায় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। বুধবার সকালেও চলে ধরপাকড়। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৫ জনকে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। অভিযুক্তের বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র বেশ কিছুদিন ধরে উত্তপ্ত বাংলা। বোমা-বারুদের স্তূপে পরিণত হয়েছে রাজ্য। কার্যত প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসছে। ঝরছে রক্ত। প্রাণহানি হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে ভোট-হিংসায় দেগঙ্গায় নিহত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা বললেন রাজ্যপাল। রাজভবন থেকে ফোন করে নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ফোন করে নিহতের বাবা ও কাকার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।