
Rathyatra: প্রায় ৩৫ বছর ধরে বন্ধ ছিল বজবজ চিত্রগঞ্জ কালীবাড়ির রথ টানা। রথ টানা বন্ধ থাকলেও প্রত্যেক বছরই রথের দিন পুজো করা হতো। পাশাপাশি রথকে কেন্দ্র করে কালীবাড়িতেই বসতো মেলা। প্রায় ৩৫ বছর ধরে রথ টানা বন্ধ থাকলেও অবশেষে এই বছর বজবজ চিত্রগঞ্জ কালীবাড়িতে টানা হবে রথ। কালীবাড়ি থেকে রথ বেরিয়ে বজবজ চৌরাস্তায় শিব মন্দিরে মাসির বাড়িতে থাকবে রথ। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাজ সাজরব বজবজে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে করা হবে রথযাত্রা। স্বর্গীয় জগন্নাথ দাস বজবজ হালদার পাড়া নিবাসী তার বাড়িতে এই রথ হত বলে জানা গিয়েছে।
তিনি ১৯৮০ সালে রথটি রক্ষণাবেক্ষণ এবং পূজোর জন্য কালীবাড়ির তৎকালীন কমিটিকে দান করেন। তারপর থেকে মাত্র দু থেকে তিনবার কালীবাড়ি থেকে রথযাত্রার দিন বেরিয়েছিল রথ। এরপর কালীবাড়ির সেই রথ বিকল হয়ে ভগ্নদশায় পরিনত হয়েছিল। যার কারণে রথ যাত্রার দিন আর বের করা হতো না রথ। তবে রথ টানা না হলেও রথযাত্রা সময় পুজো হতো এবং মেলাও বসত। কালীবাড়ি কমিটির আর্থিক অবস্থা সেই রকম না থাকার কারণে রথ সারানো যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভক্ত রথ বিকল হয়ে পড়ে থাকার খবর শোনা মাত্রই এই বছর রথ পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু করেন।
শুক্রবার রথযাত্রা উপলক্ষে মল্লগর বিষ্ণুপুরে রথের দড়িতে পড়লো টান। উপচে পড়া ভিড় দর্শনার্থীদের। রথে চড়ে নগর পরিক্রমা শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল ঠাকুরজীউ । এ যেন এক ব্যাতিক্রমী রথযাত্রা, প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো মল্ল রাজাদের স্মৃতি বিজড়িত বিষ্ণুপুরের এই রথ। এখানে সুভদ্রা, বলরাম, জগন্নাথকে রথে চাপানো হয় না। রথে চাপানো হয় শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল ঠাকুরজীউকে। এখানে এটাই রীতি এটাই নীতি। পুরনো ঐতিহ্য মেনে তার ধারাবাহিকতা আজও বজায় রেখেছে বর্তমান প্রজন্ম।
প্রথমে বিষ্ণুপুর পৌরসভা দশ নম্বর ওয়ার্ডে মদন গোপাল মন্দির থেকে শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল ঠাকুরজীউ এর মূর্তিকে নাম সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে রথে চাপানো হয় তারপর চলে পুজোপাঠ। এরপরেই শুরু হয় রথ টানা। পুরনো ঐতিহ্য মেনে প্রথমে ছোট রথ তিনবার টানা হয়। এরপরেই বড় রথ টানা হয়। আর রথ টানতে সাত সকালেই উপচে পড়া ভিড় দর্শনার্থীদের। রথের দড়িতে টান দিয়ে একটু পূণ্য করে নিতেই দর্শনার্থীদের ভিড়।
অন্যদিকে রথের প্রস্তুতি শুরু নদীয়ার মায়াপুর ইসকন মন্দিরেও। মহাসমারোহে ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে শতাধিক ভক্ত সমাগমে ভরে উঠেছে নদীয়ার মায়াপুর রাজাপুর জগন্নাথ মন্দির। মায়াপুর রাজাপুর জগন্নাথ মন্দির থেকে তিনটি সুসজ্জিত রথে করে জগন্নাথ বলভদ্র এবং সুভদ্রা দেবী মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। তার আগেই বিশেষ পূজাপাঠ এবং তার সঙ্গে রথ টানার জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। ইসকন মায়াপুরের পক্ষ থেকে ভক্তদের জন্য ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রথ যাওয়ার রাস্তায় বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্নানযাত্রার পর প্রভু জগন্নাথের জ্বর আসে এবং আজকের রথের দিন বলভদ্র এবং সুভদ্রা কে সঙ্গে নিয়ে জগন্নাথ দেব মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তাই রাজাপুর মন্দিরে মহা ধুমধাম এর সঙ্গে পালন করা হচ্ছে মায়াপুর ইসকনের তরফ থেকে রথযাত্রা।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।