
Kalimpong Landslide News : শ্রাবণ মাসের শুরু থেকেই মৌসুমি অক্ষরেখা অতি সক্রিয় হওয়ায় ঘূর্ণাবর্তের জেরে লাগাতার বৃষ্টিতে ভিজছে উত্তরবঙ্গ। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তা নদী। যারফলে এবার তিস্তার ধারে তারখোলায় ধস নামল। এর জেরে জাতীয় সড়ক ১০ (NH-10)-এর একটি বড় অংশ ভেঙে পড়েছে। রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যান চলাচলে ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। আতঙ্কে পথচলতি মানুষ ও যাত্রীবাহী গাড়ির চালকরা।
এদিকে ধসের খবরে প্রশাসনের তরফে বিকল্প রুটে গাড়ি ঘোরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপাতত ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীদের যাত্রার আগে রাস্তার অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। তবে বারংবার প্রশাসনের তরফে ন্যাশনাল হাইওয়ে ১০ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে, যে বিকল্প পথ দেখানো হয় তারও বর্তমান পরিস্থিতি ভয়াবহ বলেই জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, হাওয়া অফিসের তরফে আগেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। আগামী কয়েক দিন পাহাড়ে আরও বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ। জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাকে “রেড অ্যালার্ট” (চূড়ান্ত সতর্কতা) ও দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলাকে “ইয়েলো অ্যালার্ট” (সতর্কতা) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২ থেকে ৩ অগাস্ট আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে ২০ সেমি-র বেশি বৃষ্টির আশঙ্কা, দার্জিলিং, কোচবিহার, কালিম্পং-এও প্রবল বৃষ্টি হবে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস।
এছাড়াও ৪ থেকে ৭ অগাস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। যারফলে নিচু এলাকা ও আন্ডারপাসে জল জমে বন্যার আশঙ্কা। পাহাড়ি জেলায় ভূমিধসের সম্ভাবনা। কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ। রাস্তা ও নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
এদিকে, কিশোরী গঞ্জে নদী ভাঙ্গন রোধে ভাগীরথীর পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, নাদনঘাট থানা নসরতপুর পঞ্চায়েতের কিশোরী গঞ্জ গ্রামটি ভাগীরথী তীরবর্তী নদী ভাঙ্গন কবলিত একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। এই গ্রামে বেশির ভাগ মানুষই কৃষি কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। ক্ষেতমজুরের কাজ করেই তারা তাদের সংসার চালায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই ভাগীরথীর করাল গ্রাসে তাদের চাষের জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে ভিটেমাটি সব। সহায় সম্বলহীন হয়ে অনেকেই এই স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে গিয়েছেন।
বর্ষার মরশুমে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। একের পর এক গাছ ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কিছুদিন আগেই এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জেলা শাসক আয়েশা রানী সহ বিভিন্ন আধিকারিকেরা এই অঞ্চলটি পরিদর্শন করে যান। এবং নদী ভাঙন রোধ করতে রাজ্য সরকার দুই কোটি পঁচিশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষের সমস্যা মেটাতে ওই টাকায় সেচ দফতরের তরফে ভাঙন প্রতিরোধে ভাগীরথীর পাড় বাধানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। বাঁশের খাঁচা বেঁধে বোল্ডার ফেলে ভাঙ্গন রোধের কাজ করা হবে। নদী ভাঙন রোধে পাড় বাধানোর কাজ শুরু হওয়ার খুশি কিশোরী গঞ্জের ভাগীরথীর পাড়ের মানুষজন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।