
ছাত্রীকে সমকামিতার প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে। কিন্তু অধ্যাপিকার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পড়ুয়াকে শারীরিক ও মানসিক হেনস্থা করাহয়েছে বলেও নির্যাতিতার অভিযোগ। যদিও অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে কলেজ ছাড়ার পরই এই অভিযোগ করেন ছাত্রী। এই ঘটনা হুগলির আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয়ে। সংগীত বিভাগের এক অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ। এক প্রাক্তন ছাত্রী দাবি করেছেন, কলেজে পড়াশোনা চলাকালীন সময় অধ্যাপিকা তাঁর প্রতি ‘অস্বাভাবিক আবেগ’ প্রকাশ করেন এবং সমকামিতা সম্পর্ক রাখতে দিনের পর দিন চাপ দিয়ে গেছেন।
ছাত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী, অধ্যাপিকা প্রথমে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন এবং পরে তাঁর বাড়ির দোতলায় একটি ঘর ভাড়া নেন। তারপর ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ছাত্রীর দাবি, অধ্যাপিকা তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দেন — যা তিনি প্রত্যাখ্যান করলে শুরু হয় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। অভিযোগ আরও গুরুতর: অধ্যাপিকা ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন, ভয় দেখান এমনকি আত্মহত্যার হুমকিও দেন। একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন ছাত্রী অধ্যাপিকার প্রস্তাব না মানায়।
ছাত্রী পড়াশোনা শেষে অন্য একটি কলেজে চলে গেলেও, তার ওপর হেনস্থার চাপ আজও থেমে নেই। এমনকি তার পড়াশোনাতেও এর প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রীর পরিবার। গত জুন মাসেই আরামবাগ থানায় ওই প্রাক্তন ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে তৎকালীন সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া না পাওয়ার অভিযোগ ছিল পরিবারের। কিন্তু সম্প্রতি ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে আরেক ছাত্রী হেনস্থার অভিযোগ করে। সেটি সামনে আসতেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। গতকাল ওই অধ্যাপিকা অন্য এক ছাত্রীকে ঘন্টাখানেক অন্ধকার রুমে বন্ধ রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে ব্যাপক চর্চা ও নিন্দার ঝড়। অনেকেই বলছেন, “ব্যক্তিগত অনুভূতি থাকতেই পারে, কিন্তু শিক্ষিকার এমন জোর করে চাপ সৃষ্টি করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।” যদিও অভিযুক্ত অধ্যাপিকা এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া দেননি। পুলিশ সূত্রের খবর এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় থানা। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।