শনিবার এই বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি আপাতত শিলিগুড়িতে এসেছেন। কারণ এখানে জি–২০ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সেটাই সরেজমিনে দেখতে এসেছেন তিনি।
এখনও থমথমে হাওড়া। রাম নবমী শোভা যাত্রার সময় টানা দ্বিতীয় বছর এই নিয়ে হিংসার ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার হাওড়ার মুসলিম অধ্যুষিত কাজীপাড়া-শিবপুর এলাকায় একটি মিছিলে পাথর ছোড়ার পর হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় কয়েক ডজন গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বহু মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার জন্য শোভা যাত্রার আয়োজকদের দায়ী করেন।
শনিবার এই বিষয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি আপাতত শিলিগুড়িতে এসেছেন। কারণ এখানে জি–২০ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সেটাই সরেজমিনে দেখতে এসেছেন তিনি। সস্ত্রীক তিনি এখানে এসেছেন। ইতিমধ্যেই মনিটারিং সেল রাজভবনে গড়ে তোলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। হাওড়া কাণ্ডের পরে রাজভবনে খোলা হয়েছে আলাদা মনিটরিং সেল।
রাজ্যপাল এদিন বলেন ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ এলাকায় মনিটরিং করছে। ঘটনায় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজভবন যে সেল গঠন করেছে তারা রিয়েল টাইম মনিটরিং করছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে, দিন কয়েকের মধ্যেই ওই এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, হাওড়া কাণ্ডে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা জানানো হয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত বিষয়টি জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে। রামনবমীর দিন সংঘর্ষের ঘটনা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার সিআইডিকে তদন্তভার দিয়েছে। আর সিআইডি’র প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই হাওড়ায় গিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় শোভাযাত্রা না করার জন্য আয়োজকদের সতর্ক করা হয়েছিল। তবু ওখানে যাত্রা নিয়ে যাওয়া হল কেন! তিনি হাওড়ার ঘটনাকে দাঙ্গা বলে অভিহিত করেছেন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে এর জন্য পরিবেশ তৈরির অভিযোগ করেছেন। তবে মমতার এই অভিযোগের পর পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছে গেরুয়া শিবির।
শোভাযাত্রার আয়োজকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মুসলিম এলাকায় শোভাযাত্রা না করার জন্য আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম। বলা হয়েছিল রাম নবমীর মিছিল বের করা চলবে না। তারপরও কেন সে রুট বদল করল। কেন একটি অননুমোদিত রুট নিন যা বিশেষভাবে একটি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে? যদি তারা বিশ্বাস করে যে তারা অন্যদের আক্রমণ করবে এবং আইনি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে স্বস্তি পাবে তবে তাদের জানা উচিত যে জনগণ একদিন তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। মমতা বলেন, যারা অন্যায় করেনি তাদের গ্রেফতার করা হবে না। বিজেপি কর্মীরা মানুষের বাড়িতে বুলডোজার ব্যবহারের সাহস পেল কী করে?