'পশুদের হামলা করে কামড়াতে দেখেছি, এইভাবে কোনও সভ্য মহিলাকে কামড়াতে এই প্রথম দেখলাম।' জামিন পেয়ে বুধবারের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা।
'এটা আমাদের নৈতিক জয়',জামিন পেয়েই প্রথম প্রতিক্রিয়া অরুণিমার। আদালতে ধোপে টিকল না পুলিশের সাওয়াল। ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই জামিন পেলেন অরুণিমা-সহ বাকি ৩০ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী। এবার সংবাদমাধ্যমের সামনে সে দিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন কর্মপ্রার্থী অরুণিমা। 'পশুদের হামলা করে কামড়াতে দেখেছি, এইভাবে কোনও সভ্য মহিলাকে কামড়াতে এই প্রথম দেখলাম।' জামিন পেয়ে বুধবারের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা। তিনি আরও বলেন,'এটা আমাদের সার্বিক জয়, আমাদের নৈতিক জয়। আমরা ক্রিমিনাল নই, আদালতের রায়ে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আমাদের চাকরি চুরি গিয়েছে। কিন্তু আমরা ন্যায্য আমাদের নিয়ো অনিবার্য।' পুলিশ কর্মীর আচরণ প্রসঙ্গে অরুণিমা বলেন, 'অঝোরে রক্ত ঝড়লেও কোনও চিকিৎসা হয়নি। একটি টিটেনাস ইঞ্জেকশন দেওয়া হলেও চিকিৎসা যে হয়েছে সে কাগজ পাইনি।'
নিয়োগ চেয়ে বুধবার ফের পথে নেমেছিল ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। বিক্ষোভে আরও একবার উত্তাল হয় তিল্লোত্তমা। রাজপথে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের মাঝেই বড় অভিযোগ। আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের সরানোর নাম করে তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি এক আন্দোলনকারীকে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠল এক মহিলা পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মী। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে টানা হেঁচড়া চালানোর অভিযোগও ওঠে।
বুধবার একদিকে ধর্মতলা থেকে এক্সাইড চত্বরে চলছিল চাক্কা জ্যাম। অন্যদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান আর একদল আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী। বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়ন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনি। আন্দোলকারীদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় এক আন্দোলনকারীর হাতে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলা পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী অবশ্য গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীদের কেবল সরানোর চেষ্টা হয়েছিল।
৯ নভেম্বর নিয়োগের দাবিতে ফের একবার পথে নামেন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীরা। বেলা বাড়তেই কলকাতার ধর্মতলা, রবীন্দ্র সদন চত্বরে জমা হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। শুরু হয় চাক্কা জ্যাম। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। পুলিশের প্রিজন ভ্যানের চাকার তলায় শুয়ে পড়েন বেশ কিছু চাকরি প্রার্থী। তাঁদের মুখে শুধু একটাই কথা, 'হয় নিয়োগ, নাহলে মৃত্যু।' কার্য রণক্ষেত্রের রূপ নেয় বুধবার দুপুরের কলকাতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন, কলকাতা পুলিশর ডিসি সাউথ আকাশ মাঘেরিয়া।