আইএসএফ সূত্রের জানা গেছে মৃত কর্মীর নাম হাসান আলি মোল্লা। দলের আরও চার জন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।পুলিশের দুই কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে বলেও জানা গেছে।
মনোনয়ন পর্ব থেকে যে রাজনৈতিক হিংসা শুরু হয়েছে তা এখনও অব্যাহত ভাঙড়ে। সন্ত্রাসের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে ভাঙড়। মঙ্গলবাহর গভীর রাতে পুলিশ আর আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। সেই সময়ই গুলিতে জখম হয়ে এক আইএসএফ কর্মীর । সংঘর্ষে আহত হয়েছে দুই পুলিশ কর্মী। রাতভর সংঘর্ষের পর এখনও থমথমে ভাঙড়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আইএসএফ সূত্রের জানা গেছে মৃত কর্মীর নাম হাসান আলি মোল্লা। দলের আরও চার জন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে। যদিও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কিছু জানায়নি। তবে পুলিশের দুই কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে বলেও জানা গেছে। আহত অ্যাডিশনার এসপি-র হাতে গুলি লেগেছে। আর তার গার্দের গুলি লেগেছে পায়ে। তাদের চিকিৎসা চলছে এনআরএস হাসপাতালে। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার সকালেই ভাঙড়ে গেছে উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসাররা। ভাঙড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি সাউথবেঙ্গল সিদ্ধিনাথ গুপ্তা। তবে বুধবার সকাল থেকে নতুন করে কোনও সংঘর্ষের খবর নেই বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তবে গতকাল রাতে দফায় দফায় সংঘর্ষ, বোমাবাজির কারণে রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকা। ভোটকর্মী রাতভর আটকে ছিল গণনাকেন্দ্র। বুধবার ভোরবেলা তাদের উদ্ধারকরে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ১২টারও পরে নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে আইএসএফ কর্মীরা। একের পর এক বোমা পড়ে বলে অভিযোগ। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাল্টা পুলিশও বরার বুলেট চালায়। কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে আইএসএফ কর্মীরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ভোট গণনাকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। স্থানীয় আইএসএফ নেত্রী রেশমা খাতুন জানিয়েছেন, জেলা পরিষদে তাদের প্রার্থী জাহানারা খাতুন পাঁচ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ফল প্রকাশের সময় তাঁকে পরাজিত বলে ঘোষণা করা হয়। বিডিও জানান ৩৬০ ভোটে হেরে গেছেন তিনি। আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ প্রশাসনের তৃণমূলের হয়ে কাজ করেছে। তাতেই জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে। এই ঘটনার পর থেকেই গণনাকেন্দ্রে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। আইএসএফরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুলিশ বাধা দিলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে পড়ে।
ভাঙড়-১ এর ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে মাত্র দুটিতে ভোট হয়েছে। একই ভাবে তৃণমূল কংগ্রেস ২৭টি ব্লক আর দুটি জেলা পরিষদের আসন জয় করেছে। অন্যদিকে ভাঙড় ২ নম্বরে ২১৮ পঞ্চায়েত, ৩০টি ব্লক আর তিনটি জেলা পরিষদের আসন রয়েছে। তারমধ্যে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী তৃণমূল। ভোট হয়েছে ১৩০টি আসনে। অন্যদিকে একটি ব্লকে ৮২জন আইএসএফ প্রার্থী ও ১৯ সিপিআইএম প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তাদের ভোটপত্রের ত্রুটির কারণে। আর এই কারণে ভাঙড়ে যে কটি আসনে নির্বাচন হয়েছিল তাতে অশান্তি না হওয়াই ঠিক ছিল। কারণ বিরোধীদের থেকে অনেক অনেক এগিয়ে ছিল তৃণমূল।