নরেন্দ্রপুরের খেয়াদহ ২ নম্বর গ্রামপঞ্চয়াতের রানাভুতিয়া এলাকার বাসিন্দা শুক্লা দাস। তিনি নিজের ১১ দিনের শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ।
পানিহাটির পর এবার শিশু বিক্রির ঘটনা নরেন্দ্রপুরে। এক বিধবা মা তাঁর নিজের মাত্র ১১ দিনের সন্তানকে বিক্রি করেছে। অভিযুক্ত মা শুক্লা দাসকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
নরেন্দ্রপুরের খেয়াদহ ২ নম্বর গ্রামপঞ্চয়াতের রানাভুতিয়া এলাকার বাসিন্দা শুক্লা দাস। তাঁর স্বামী বছর পাঁচেক আগে মারা যায়। বিধবা মহিলা একাই থাকতেন। স্থানীয় সূত্রের খবর একজনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তারই জেরে সন্তান সম্ভাবা হন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন মহিলা সন্তাম নষ্ট করার চিন্তাভাবনা করছিলেব। কিন্তুস সেই সময়ই প্রতিবেসী শান্তি মণ্ডল ও তাঁর স্বামী তাপস মণ্ডল সন্তান নষ্ট করায় বাধা দেয়। তারাই সন্তান বিক্রির প্রোরোচনা দেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শান্তি আয়ার কাজ করেন। সেই সূত্রের অনেকের সঙ্গে তার পরিচয় রয়েছে।
শান্তি পঞ্চসায়র এলাকার বাসিন্দা ঝুমা মাজির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেয় শুক্লার। সেই ঝুমার হাতেই শুক্লা তার মাত্র ১১ দিনের সন্তানকে তুলে দেয়। বিনিয়ম তিনি ২ লক্ষ টাকা পান। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শুক্লার প্রতিবেশী উত্তম হালদার নরেন্দ্রপুর থানায় সন্তান বিক্রির অভিযোগ করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। এই ঘটনায় শুক্লার সঙ্গে শান্তি ও তাঁর স্বামী তাপসকেও গ্রেফতার করে। পুলিশের অনুমান শান্তি ও তাপস এই সন্তান বিক্রির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
যাইহোক কিছুদিন আগে পানিহাটিতে নেশার টাকা জোগাড়ের জন্য নিজেদের দুধের শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই শিশুটিকে এখনও খুঁজেও পাওয়া যানি শিশুকে।
Manipur Video: মণিপুরের মহিলাদের যৌন নির্যাতনের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ, বিচার হবে রাজ্যের বাইরে
পানিহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড গান্ধীনগর অঞ্চলের বাসিন্দা জয়দেব চৌধুরী। তার স্ত্রী সাথী চৌধুরীর। তারাই নিখোঁজ শিশুটির বাবা ও মা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন দম্পতি প্রায়ই মদের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকত। পরিবারের কহল হত নেশার টাকা নিয়ে। তাদের বাড়িতে নিত্যদিনও প্রচুর অজ্ঞাতপরিচয় ছেলে মেয়ের আশা যাওয়া ছিল। স্থানীয়দের কথায় চৌধুরী বাড়িতে অসামাজিক কাজকর্মও চলত। দিন কয়েক ধরেই জয়দেব ও সাথীর মাত্র ৮ মাসের পুত্র সন্তানকে প্রতিবেশীরা দেখতে পায়নি। তখনই সন্দেহ দানা বাঁধে। একাধিকবার জিজ্ঞাসা করতেও কোনও সদুত্তর পায়নি প্রতিবেশীরা। তাতেই প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তারাই স্থানীয় কাউন্সিলেরকে সমস্ত বিষয়টি জানায়।
কাউন্সিলর পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জয়দেব ও সাথীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাতেই সামনে আসে তারা তাদের সন্তানকে বেচে দিয়েছে। হাতে নেশা করার টাকা ছিল না। আর সেই কারণে তারা সন্তান বিক্রি করে দিয়েছিল। শনিবার রাতেই পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে জয়দেব ও সাথীকে এই কাজে সাহায্য করেছিল নিখোঁজ শিশুর ঠাকুরদা কানাই চৌধুরী। তাকেও গ্রেফতার করেছে পানিহাটি থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর তিন জনকেই দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। তবে এখনও তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট নয় কত টাকার বিনিময় আর কাদের কাছে দুধের শিশুকে বিক্রি করেছে বাবা ও মা। তদন্তকারীরা শিশু পাচারচক্রের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। শিশু পাচারচক্র এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে বলেও অনুমান তদন্তকারীর।