সপ্তাহ শেষে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কেমন থাকবে বাংলার আবহাওয়া?

পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ভারী বৃষ্টিপাত। উপকূলে চলবে দমকা হাওয়া। আবহাওয়ার আর কী কী পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস?

Sahely Sen | / Updated: Aug 13 2022, 07:04 PM IST

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে টানা ৩ দিন নিম্নচাপের প্রভাবে ভালোই বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। বাংলায় এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৮%, যা কলকাতায় রয়েছে প্রায় ৪৪%। এ বছরের বর্ষায় বৃষ্টির ঘাটতিতে চাষবাসের যতটা ক্ষতি হয়েছিল বা হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তার অনেকটাই সামাল দেওয়া গেছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। মাঝে দু’একদিন বৃষ্টি থেমে একটু রোদ্দুর দেখা দিলেও সপ্তাহের শেষেই ফের বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। 


 

হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরের ওপর একটা নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে যা পরে শক্তি বাড়িয়ে আরও প্রবল আকার ধারণ করবে। তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপটি আরও শক্তি বাড়িয়ে পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে মোড় নিয়ে ওড়িশার দিকে এগোবে। প্রতিবেশী রাজ্যের দিকে চলে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূল অঞ্চলের জেলা অর্থাৎ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি থাকছে। বিশেষ করে এই বৃষ্টিপাত ১৩ তারিখে শুরু হয়ে ১৪ তারিখ অবদি অর্থাৎ, চলতি সপ্তাহে রবিবার পর্যন্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কলকাতা বা তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর আগামী ১৫ তারিখ ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, আগামী ১৭ তারিখ বৃষ্টির পরিমাণ আবার কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদ ড: সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায়।



আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ১৩ তারিখ উপকূল সংলগ্ন এলাকাগুলিতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। তবে, ১৪ ও ১৫ তারিখে সেই হাওয়ার গতিবেগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। মৌসম ভবনের রিপোর্ট বলছে, ১৪ আর ১৫ তারিখে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার। সমুদ্রের ওপর ও এই ঝোড়ো হাওয়ার বেগ প্রবল থাকার জন্য ১৩ তারিখ থেকে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, যেসব মৎস্যজীবী মাঝ সমুদ্রে আছেন, তাঁদের ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নদী উপকূলবর্তী এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা। ওই সমস্ত এলাকায় চাষের জমিতে জল ঢুকে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। দিঘা, মন্দারমণি, সাগরে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা, ফলে সমুদ্র সৈকতে বেরাতে যাওয়া পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। 

উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে আবহাওয়া খুব একটা ভিন্ন নয়। আগামী ১৩ ও ১৪ তারিখে উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা কম হতে পারে, বৃষ্টি থেমে গেলে তাপমাত্রা ফের স্বাভাবিকের জায়গায় ফিরে আসবে। দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রেও তাপমাত্রার হেরফের একই ধরনের হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের দ্বারা ধান ও পাট চাষের ক্ষয়ক্ষতি যথেষ্ট পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদ সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায়। 
 

আরও পড়ুন-
গভীর নিম্নচাপের প্রভাব ওড়িশায়, তাহলে কি রক্ষা পাবে বাংলা?
দু’তিন দিনের মধ্যেই ফের বদলাবে আবহাওয়া, বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই দক্ষিণবঙ্গে? 
ছত্তীসগঢ়ের দিকে সরছে নিম্নচাপ, আরও প্রবল বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে?

Share this article
click me!