ছোট ব্যবসায়ী থেকে দোর্দন্ডপ্রতাপ অনুব্রত- কেমন ছিল বীরভূমের কেষ্টর যাত্রা

Published : Aug 11, 2022, 12:45 PM IST
ছোট ব্যবসায়ী থেকে দোর্দন্ডপ্রতাপ অনুব্রত- কেমন ছিল বীরভূমের কেষ্টর যাত্রা

সংক্ষিপ্ত

১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। কংগ্রেস ছেড়ে অনুব্রতও চলে আসেন তৃণমূলে। বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি হন সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর অনুব্রত হন যুব তৃণমূলের সভাপতি। 

বোলপুরের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা। বীরভূমের একচ্ছত্র অধিপতি। তাঁর কথায় কার্যত বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়। অনুব্রতর দাপট নিয়ে তৃণমূলের কোনও স্তরেই সংশয় নেই। সেই অনুব্রত এখন সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার। কিন্তু কেষ্ট থেকে অনুব্রত হয়ে ওঠার গল্পটা কেমন ছিল। 

কে এই অনুব্রত মন্ডল

নানুরের হাটসেরান্দি গ্রামে আদি বাড়ি তাঁর। তবে বর্তমান ঠিকানা বোলপুরের নিচুপট্টি এলাকার পনেরো নম্বর ওয়ার্ড। নানুরে আন্দোলন করার সময়ই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে পড়ে যান অনুব্রত। তিন ভাইয়ের মধ্যে অনুব্রত মেজ। অষ্টম শ্রেণির পরে আর পড়াশোনাও করেননি। এর পরে বাড়িতেই বাবার মুদি দোকান দেখাশোনা শুরু করেন তিনি। এর পাশাপাশি অনুব্রতদের একটি গ্রিলের কারখানাও ছিল। সেই কারখানারও দেখাশোনা করতে হত তাঁকে। 

রাজনীতিতে অনুব্রতর প্রবেশ কংগ্রেসের হাত ধরে। বরাবরই ডাকাবুকো স্বভাবের হওয়ায় সহজেই জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের নজরে পড়ে যান তিনি। যুব কংগ্রেসের হয়ে কাজ করার সময়েই তৎকালীন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাপ হয় অনুব্রতর। সেই সময় সংগঠনের কাজেই বীরভূমে আসতে হত মমতাকে। পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক গৌতম বসুর মাধ্যমে মমতার আরও আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন কেষ্ট। 

১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। কংগ্রেস ছেড়ে অনুব্রতও চলে আসেন তৃণমূলে। বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি হন সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর অনুব্রত হন যুব তৃণমূলের সভাপতি। 

তবে দলের মধ্যে অনুব্রত মমতার বিশ্বাস অর্জন করে নেন নানুর কাণ্ডের সময়। ২০০১ সালে নানুরের সূঁচপুরে ১১ জন চাষিকে হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। মুকুল রায়কে নিয়ে নানুরে যান মমতা। সেই সময়েই জেলায় সিপিএম বিরোধী জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলে মমতার আরও আস্থা অর্জন করে নেন অনুব্রত। 

এর পরে অনুব্রতকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দলের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০০৩ সালে তৃণমূল ছেড়ে দেন বীরভূমের জেলা সভাপতি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জায়গায় অনুব্রতকে জেলার দায়িত্ব দেন মমতা। গত ষোল বছরে তৃণমূল জেলা সভাপতি হিসেবে গোটা বীরভূমে নিজের একছত্র দাপট তৈরি করেছেন অনুব্রত। বাম দুর্গ বীরভূমে প্রতিকূলতার মধ্যেও সংগঠন তৈরি করে ফেলেন অনুব্রত। একাধিকবার হেনস্থার শিকারও হতে হয় তাঁকে। প্রাণহানি হওয়ার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখিও হতে হয়েছে। তবু পিছু হটেননি কেষ্ট। আর ২০১১ সালে একসময়ের লাল দুর্গ বীরভূমকে সবুজ দুর্গে পরিণত করে ফেলেন দাপুটে এই তৃণমূল নেতা। নিজেই স্বীকার করেছেন, নেত্রী তাঁকে সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি বীরভূম নিয়েই ভাল আছেন। 

তবে নিজের এই দাপট ধরে রাখতে গিয়েই বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। কখনও ভরা জনসভায় পুলিশকে বোমা মারতে বলেছেন, কখনও চড়াম চড়াম করে ঢাক বাজানোর নিদান দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে গুড় বাতাসা বা নকুলদানা খাওয়ানোর মতো নিদান দিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। তবু অনুব্রত আছেন অনুব্রততেই।

PREV
click me!

Recommended Stories

BJP News: মুর্শিদাবাদে বদলাচ্ছে রাজনীতির সমীকরণ! বড়ঞায় বিজেপিতে যোগ দিল শতাধিক নেতৃত্ব
জুতো পায়ে আম্বেদকরকে শ্রদ্ধা নিবেদন! ভিডিও ভাইরাল হতেই বিতর্কে তৃণমূল নেতা