দেওরের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে মারধরের পর মহিলার চুল কেটে দেন তাঁর ভাসুর ও গ্রামের বাসিন্দারা। এমনকী, ওই দেওরের সঙ্গে জোর করে তাঁকে বিয়েও দেওয়া হয়েছে।
মধ্যযুগীয় নির্যাতন ক্যানিংয়ে। এক দেওরের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে মারধরের পর মহিলার চুল কেটে দেন তাঁর ভাসুর ও গ্রামের বাসিন্দারা। এমনকী, ওই দেওরের সঙ্গে জোর করে তাঁকে বিয়েও দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটেছে ক্যানিংয়ের ডাবু গ্রাম এলাকায়।
বছর তিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল ওই মহিলার স্বামীর। এরপর দুই ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন তিনি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর আগেই দেওরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। আর তা নিয়ে প্রায়দিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। এরপর স্বামীর মৃত্যুর পর প্রায়ই দেওর-বউদিকে একসঙ্গে দেখা যেত। বুধবার ঘরের মধ্যে তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলেছিল মহিলার ছোটো ছেলে। এরপর সেই পরিবারের অন্য সদস্যদের খবর দিয়েছিল।
গ্রামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, খবর পেয়ে ওই মহিলা ও তাঁর দেওরকে ঘর থেকে বের করা হয়। তাঁদের মারধর করে কেটে দেওয়া হয় মহিলার চুল। এরপর দেওরের সঙ্গেই ওই মহিলার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দেওরের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন ওই মহিলা। তিনি জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেদের নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। তখন তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেওর। যদিও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি ভাসুর পরিতোষ সর্দার ও গ্রামের অন্য বাসিন্দারা। অভিযোগ, সেই সময় পরিতোষ তাঁকে খারাপ প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। এরপর তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন পরিতোষ। বুধবার একটি দরকারে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন দেওর। সেই সময় গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের নিয়ে তাঁদের বাড়িতে হাজির হন পরিতোষ। এরপর মিথ্যে বদনাম দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওরের পাশাপাশি তাঁকেও মারধর করা হয়। কেটে দেওয়া হয় চুল। এলাকা ছাড়ার পর এখন ক্যানিং স্টেশনে রাত কাটাচ্ছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন- শিয়ালদহ ফ্লাইওভারের নিচে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে ছুরির কোপ, গ্রেফতার মদ্যপ যুবক
ঘটনার পরই পরিতোষ সহ আটজনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ক্যানিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আরও পড়ুন- আজ থেকে খুলে গেল কালীঘাট মন্দির, সকাল থেকেই ফুলের ডালি হাতে ভক্তদের ভীড় গর্ভগৃহে
যদিও অভিযুক্ত পরিতোষ বলেন, "স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই ওদের দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। দু'বার গ্রামে পঞ্চায়েত বসিয়ে এ নিয়ে বিচারও হয়েছে। ছেলেটিরও সংসার রয়েছে। কিন্তু, ওই মহিলার জন্য তার সংসারও ভেঙে গিয়েছে। এরপরই বুধবার তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামের মানুষ। মহিলার ছেলেই ফের মায়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।"