সংক্ষিপ্ত
চলতি বছরে ২৪ শে অক্টোবর কালীপুজো। এদিন সকলেই মেতে ওঠেন শ্যামা মায়ের আরাধনায়। এদিন শক্তিরূপিনী দেবীর আরাধনার দিন। মা কালীর পুজোর সময় বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা সকলেরই মেনে চলা উচিত। কালীপুজোর দিনে ভুলেও করবেন না এই কাজগুলি । সামান্য ভুলের কারণেই রুষ্ট হবেন মা কালী এবং পিছু ছাড়বে না দুঃখ-দুর্দশা।
চলতি বছরে ২৪ শে অক্টোবর কালীপুজো। এদিন সকলেই মেতে ওঠেন শ্যামা মায়ের আরাধনায়। এদিন শক্তিরূপিনী দেবীর আরাধনার দিন। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো শেষ হতে না হতেই কালীপুজোর জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকে বাঙালিরা। সকলেই নিষ্ঠাভরে মায়ের আরাধনা করে থাকেন। অমাবস্যা তিথিতেই মা কালীর পুজো করা হয়। সারাদিন উপোস করে নিষ্ঠাভরে মায়ের পুজো করা হয়। তবে মা কালীর পুজোর সময় বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে, যা সকলেরই মেনে চলা উচিত। তবে অনেক সময়েই অজান্তেই ভুল করে ফেলি আমরা। আর নিজেদের এই ভুলে ডেকে আনি চরম বিপদ। কালীপুজোর দিনে ভুলেও করবেন না এই কাজগুলি । সামান্য ভুলের কারণেই রুষ্ট হবেন মা কালী এবং পিছু ছাড়বে না দুঃখ-দুর্দশা।
কালীপুজোর দিন মহিলারা কখনওই সন্ধ্যেবেলায় খোলা চুলে থাকবেন না। এতেও নেগেটিভ শক্তি বৃদ্ধি পায়। অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা অমাবস্যার দিন নিয়ম মেনে চলুন। তা না হলেই দুভোর্গ নেমে আসতে পারে জীবনে। কালীপূজার দিন ভুল করেও সন্ধ্যেবেলার পর ঘরে ঝাড়ু দেবেন না। শাস্ত্রজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এরকমটা করলে লক্ষীদেবী ঘর থেকে বিতাড়িত হয়ে যান। দুগ্ধ জাতীয় জিনিস সন্ধ্যে বেলায় দেওয়া নেওয়া করবেন না। কারণ দুধ জাতীয় জিনিস দিলে তার বাড়ি থেকে পজিটিভ শক্তি বিদায় নেয় পরিবর্তে নেগেটিভ শক্তি বৃদ্ধি পায়। কালী পুজোর সময়ে যেখানে দেবী পূজিতা হচ্ছেন সেই ঘরে কখনওই জুতো পরে প্রবেশ করবেন না। শুধু তাই নয় পুজোর ঘরের আশেপাশেও এদিন কোনও জুতো রাখবেন না। পুজোর ঘর থেকে অনেকখানি দূরে জুতো রেখে তারপরে ঠাকুর ঘরে প্রবেশ করুন।পুজোর আগে যদি মূর্তি ভেঙে যায় তাহলে অবশ্যই মায়ের নতুন মূর্তি স্থাপন করবেন। মূর্তি ভেঙে গেলে তা জোড়া দিয়ে পুজো করবেন না। শাস্ত্রজ্ঞরা আর বলছেন, কালীপূজার দিন অলক্ষ্মী পূজা অবশ্যই করবেন। কালী পুজোর দিন নানান কাজের জন্য অনেকেই বাজার থেকে টাটকা ফুল আনতে পারেন না। তারা আগের দিন ফুল কিনে এনে সেটা রেখে দেন এবং পরের দিন সেই ফুল দিয়েই মায়ের পুজো করেন। কিন্তু মায়ের পুজোর ক্ষেত্রে এটা কখনওই করবেন না। মা কালীর পুজোর সময় অবশ্যই দিন টাটকা ফুল। পুজোর দিন ফুল কিনেই সেই ফুল নিবেদন করুন কালী মাকে। কালী পুজোর দিন চামড়া দিয়ে তৈরি কোন জিনিস ঠাকুর ঘরে রাখবেন না। পুজোর ঘরে চামড়া দিয়ে তৈরি কোন জিনিস না ঢোকানোই ভাল। শাস্ত্র মতে বলা হয় যে পুজোর ঘরে চামড়ার কোন জিনিস নিয়ে ঢোকালেই সেই ঘর অপবিত্র হয়ে যায়। তাই চামড়ার তৈরি ব্যাগ বা চামড়ার তৈরি অন্য যে কোন জিনিস পুজোর ঘরের বাইরে রাখুন।
মা কালীর পুজোতে বসার সময় পরিষ্কার অথবা নতুন কাপড় পরিধারন করুন। তবে নতুন কাপড় না পরলেও পুজোতে বসার সময় শুদ্ধ বসন পরিধান করুন। নতুন কাপড় থাকলে তা পরেও পুজোয় অঞ্জলি দিনতে পারেন। পুজোর কাজ করার সময়ও পরিস্কার কাপড় পরুন। পুজোর সময়টাতে কোনও সময়েই পূর্বপুরুষদের ছবি ঠাকুর ঘরে রাখবেন না। কারণ তারা কখনওই ঠাকুরের সমতুল্য নয়। ঠাকুর ঘরে শুধুমাত্র দেবদেবীর ছবিই রাখুন। এতে ঘোর অমঙ্গল নেমে আসতে পারে। তাই পুজোর দিন নিয়ম-নিষ্ঠা করেই সমস্তটা পালন করুন। মা কালীর ভোগ প্রস্তুতির সময় ভুল করেও কোনও কথা বলবেন না অথবা মুখে একটা কাপড় বেঁধে ভোগ প্রস্তুত করুন। কারণ কথা বলার সময়ে অনেক সময়েই আমাদের মুখের থেকে থুতু বেরিয়ে আসে। সেই থুতু ছিটকে এসে যদি ভোগের রান্নার মধ্যে পরে তাহলে তা উচ্ছিষ্ট হয়ে যায়। আর উচ্ছিষ্ট অন্ন দেবীকে নিবেদন করা মহাপাপ। মনের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট দূর করতে মা কালীর মূর্তির সামনে বসে করজোড়ে প্রার্থনা করুন । মায়ের সামনে বসে অঞ্জলির সময় ভুলেও কোন অনিষ্ট চিন্তা মাথার মধ্যে আনবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কালীপূজার সঠিক বিধি জেনে তবেই বাড়িতে পুজো করুন।কালীপুজোর দিন রাতের বেলা বাড়ির বাইরে থাকবেন না । বিশেষত কবরস্থান ও শ্মশান ইত্যাদি জায়গা এড়িয়ে চলুন। কারণ এই সময় সেখানে একটি নেগেটিভ শক্তি বিরাজ করে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন কালীপুজোর দিন কবরস্থান অথবা শ্মশানে গেলে অমঙ্গল হওয়ারই আশঙ্কা থাকে অনেক বেশি।