সংক্ষিপ্ত

  • এই মাসের আরেক নাম মার্গশীর্ষ
  • প্রাচীন বাংলা ভাষায় এই মাসটিকে আঘন নামে চিহ্নিত করা হত
  • এক সময় অগ্রহায়ণ ছিল বছরের প্রথম মাস
  • এই মাসে কিছু নিয়ম মেনে চললে বৃদ্ধি পাবে সংসারের সমৃদ্ধি

প্রাচীন বাংলা ভাষায় এই মাসটিকে আঘন নামে চিহ্নিত করা হত। মৃগশিরা নামক তারা থেকে 'মার্গশীর্ষ' নাম এসেছে।  এক সময় অগ্রহায়ণ ছিল বছরের প্রথম মাস। 'অগ্র' শব্দের অর্থ 'আগে' আর 'হায়ণ' শব্দের অর্থ 'বছর'। বছরের আগে বা শুরুতে ছিল বলেই এই মাসের নাম 'অগ্রহায়ণ'। এটি হেমন্ত ঋতুর দ্বিতীয় মাস। অগ্রহায়ণ বা অঘ্রান বাংলা মাসের অষ্টম এবং শকাব্দের নবম মাস। এই মাসের আরেক নাম মার্গশীর্ষ।  "অগ্রহায়ণ" শব্দের অভিধানিক অর্থ বছরের যে সময় শ্রেষ্ঠ ধান উৎপন্ন হয়। প্রাচীণকালে এই সময় প্রচুর ধান উৎপাদিত হত বলে এই মাসটিকেই বছরের প্রথম মাস হিসেবে ধরা হত।

আরও পড়ুন- ছট পুজোর দিনক্ষণ, জেনে নিন এই ব্রত পালনের নিয়ম

পুরাণ অনুসারে, সকল মনোষ্কামন পূরণের জন্য এবং ঈশ্বরের আর্শীর্বাদ পেতে এই মাসে উপবাস করা উচিৎ। আর এই মাসে উপোস করলে শ্রীকৃষ্ণের কৃপাদৃষ্টি বজায় থাকে। বাঙালি হিন্দু সমাজের বিশ্বাস অনুযায়ী, অগ্রহায়ণ মাস বিবাহের পক্ষে বিশেষ শুভ মাস। পশ্চিমবঙ্গের লোকসমাজে অগ্রহায়ণ মাসকে 'লক্ষ্মীর মাস' মনে করা হয়। এই কারণে এই মাসেই নবান্ন উৎসব ও লক্ষ্মীপুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়। তবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয় মাস এই মাসটি। 

আরও পড়ুন- অগ্রহায়ণ মাসেই পালিত হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী উৎসব, জেনে নিন এই উৎসবের তাৎপর্য

শাস্ত্র অনুযায়ী, এই মাসে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন সকালে সূর্য প্রণাম ও নদীতে স্নানের পর ইষ্ট দেবতার পুজো করার। হিন্দু শাস্ত্র মতে, এই মাস অত্যন্ত পবিত্র মাস। তাই এই মাসে কিছু নিয়ম মেনে চললে ঈশ্বরের কৃপা দৃষ্টি বজায় থাকবে আপনার উপর। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে সংসারের সমৃদ্ধি। এই মাসে নিরামিষ আহার গ্রহণ করুন। প্রতিদিন সম্ভব না হলে মঙ্গল ও শনিবারে অবশ্যই নিরামিষ খান। এই মাসে সকালে স্নান সেরে নিন। স্নানের জলে একটা বা দুটো তুলসী পাতা দিয়ে স্নান করুন।

এই মাসে খাদ্য শষ্যদান অত্যন্ত পুণ্যের বলে মনে করা হয়। দুঃস্থকে খাদ্য এবং বস্ত্র বা সামর্থ অনুযায়ী এই মাসে দান করলে সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়। সেই সঙ্গে মনের ইচ্ছাও পূরণ হয়। এই সময় স্নানের পর ইষ্ট দেবতার স্মরণ করে পুজো সেরে নিন। এই মাসে বাড়ি-ঘর সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে বাড়ির প্রধাণ দরজার সামনে এক বালতি জল রেখে দিন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই দরজার সামনে সেই জল ঢেলে ধুয়ে দিন। রান্না ঘরে মজুত রাখা খাবারের কৌট বা জায়গা কখনও একদম ফাঁকা করে রাখবেন না। কিছু না কিছু ভরে রাখবেন।