সংক্ষিপ্ত
একটি নিখুঁত সিনেমা গড়তে পোশাক পরিকল্পনার ভূমিকা কতটা? বাস্তবকে ফুঁটিয়ে তুলতে কতটা গভীরে গিয়ে সংস্কৃতিকে একাত্ম করতে হয়? কতটাই বা প্রতিকূলতার সন্মুখীন হন ডিজাইনার-রা, তারই কিছু অনুভুতি শেয়ার করলেন ডিজাইনার ঋতু কুমার।
একটি সিনেমা সম্পূর্ণরূপে নিখুঁত হয়ে ওঠার পেছনে পর্দার সামনের কলাকুশলীদের ভুমিকা যতটা, ক্যামেরার পেছনে থাকা সদস্যদের অবদানও ততটাই। আর এই দুই পক্ষের সঠিক ভারসাম্যে পরিপূর্ণতা লাভ করে একটি সিনেমা। পরিচালক অস্ভিন কুমার তার প্রতিটি সিনেমায় এমনই সমীকরণের ছাপ রেখে যান। সেই কথা মাথায় রেখেই নো ফাদার ইন কাশ্মীর-এর কম্টিউম স্বযত্নে ডিজাইন করেছে খোদ পরিচালকের মা ঋতু কুমার। তবে সে কাজ মোটেই সহজ সাধ্য ছিল না।
সিনেমার প্রেক্ষাপট কাশ্মীর। ফলে ফ্যাশন নিয়ে কোনও প্রকার এক্সপেরিমেন্ট করা প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন এ বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার। ঋতু কুমারের মতে, কাশ্মীরি পোশাকের ওপর নির্ভর করে ডিজাইন করতে বেজায় বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে। কারণ ফ্যাশন স্টেটমেন্ট-এর হট লিস্টে থাকা বহু পোশাকই কাশ্মীরের আবহাওয়া ও সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায়না। তাই কাশ্মীরিদের মতো করেই তাদের জীবনযাত্রা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে সমস্যা অনেক।
এ বিষয় ঋতু কুমার জানান, এখন বলে নয়, বরাবরই কাশ্মীর অনেকাংশেই সমাজের মূল স্রোত থেকে ভিন্ন। আমরা অনেকেই ভুলে যাই কাশ্মীর ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য। অথচ এইসব জায়গার পোশাক-আশাক, সংস্কৃতির ওপর গবেষণা হয় খুব কম। ফলে প্রয়োজন অনুসারে রেফারেন্স-এর অভাব ঘটে। ছবিও মেলে খুব কম। আর কাশ্মীরের পোশাক পরিকল্পনায় সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় শীতের মরশুম। আবহারওয়ার কারণে উলের পোশাক ছাড়া অন্যান্য পোশাক ব্যবহার করাও সম্ভব হয় না বাস্তবকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে। তাই প্রসঙ্গ যখন কাশ্মীর তখন কোনও ফ্যাশনের প্রসঙ্গই আসে না। একমাত্র কাশ্মীরী শাল ব্যবহার করাটা কাশ্মীরের ঐতিহ্য হিসেবে সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা সম্ভব।
তাই এই সিনেমার কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে ঋতু কুমার মনে করেন, পর্দায় প্রকৃত কাশ্মীরের রূপ দিতে বেজায় সমস্যা সন্মুখিন হতে হয়। যদিও তাঁর কাজে একবাক্যে সন্তুষ্ট পরিচালক।