সংক্ষিপ্ত
শুধু লাইনে দাঁড়ানোর ধৈর্য আছে। লন্ডনের (London) এক ব্যক্তি দিনে ১৬,২৪৮ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করছেন।
এই কাজে লাগে না কোনও বুদ্ধি। লাগে না দারুণ দৈহিক পরিশ্রম। লাগে শুধু অসীম ধৈর্য্য। আমাদের প্রত্যেককেই কোনও না কোনও লাইনে দাঁড়াতে হয়। সিনেমার টিকিট কাটা থেকে রেশনের দোকানে, মদের দোকানে এমনকী করোনাভাইরাস টিকা নেওয়ার জন্য়ও লাইনে দাঁড়াতে হয়। বেশিরভাগ মানুষই কয়েক মিনিটের জন্য লাইনে দাঁড়ালেই অধৈর্য হয়ে পড়েন। কিন্তু, লন্ডনের (London) এক ব্যক্তি ধনী এবং সচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য লাইনে দাঁড়ানোর বিনিময়ে দৈনিক ১৬০ পাউন্ড বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৬,২৪৮ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেন।
যে কোনও লাইনে দাঁড়ানোর জন্য প্রতি ঘন্টায় ২০ পাউন্ড, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২০০০ টাকার বেশি করে চার্জ করেন ফ্রেডি বেকিট। লন্ডনের ফুলহ্যাম (Fulham) এলাকার বাসিন্দা তিনি। দ্য সান পোর্টালকে তিনি জানিয়েছেন, লন্ডনবাসী হিসাবে লাইনে দাঁড়ানোটা তাঁর ছোটবেলা থেকে অভ্যাস, আর বর্তমানে তিনি বিষয়টিকে একেবারে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। তবে কাজটা শুনতে যতটা সহজ মনে হয়, আদতে ততটা সবজ নয়। ৩১ বছরের বেকিট জানিয়েছেন, তাঁর কাজের জন্য অবিশ্বাস্য পরিমাণের ধৈর্য প্রয়োজন। দিনে পুরো আট ঘন্টা প্রায় নড়াচড়া করার সুযোগই পাওয়া যায় না। কোনও কোনও সময় হিমশীতল ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়।
কারা তাঁকে লইনে দাঁড়ানোর জন্য নিয়োগ করেন? বেকিট জানিয়েছেন, ধনী স্বচ্ছল ব্যক্তিবর্গ, যাদের লাইনে দাঁড়ানোর সময় বা ইচ্ছে নেই, তাঁরাই তাঁকে অর্থের বিনিময়ে লাইনে দাঁড় করায়। গ্রীষ্মকালে লন্ডনে বড় বড় অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনী চলে। সেই সময়টাই তাঁর কাজের ব্যস্ততম সময়। অত্যন্ত জনপ্রিয় কোনও অনুষ্ঠান থাকলে, তাঁর আয় হয় সবথেকে বেশি। যেমন একবার অ্যাপোলো থিয়েটারে এক প্রদর্শনীর জন্য ষাটোর্ধ্ব কিছু ব্যক্তি তাঁকে লাইন দিয়ে টিকিট কেটে দেওয়ার বরাত দিয়েছিলেন। টিকিট কাটা এবং তারপর তাদের আসার জন্য অপেক্ষা করা - সব মিলিয়ে আট ঘন্টার কাজ ছিল। টিকিট কাটা হয়ে যাওয়ার পর, বাকি সময়টা তিনি জাদুঘরে কাটিয়েছিলেন। সেই সময়ের জন্যও তাঁর উপার্জন হয়েছিল।
তবে, যেহেতু এই কাজের জন্য কোনও বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন নেই, তাই ঘন্টায় ২০ পাউন্ডের বেশি এতে উপার্জন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া সবসময় লাইন দেওয়ার কাজ থাকে না বলে, এটাকে বেকিট পূর্ণ-সময়ের কাজ হিসাবেও নিতে পারেননি। তাই, লাইন দেওয়ার পাশাপাশি বেকিট পোষ্যের দেখাশোনা, প্যাকিং করা, বাগানে কাজ করার মতো পরিষেবার কাজেও করে থাকেন। বেকিটের দাবি, লাইনে দাঁড়ানোর কাজে উপার্জন সীমিত এবং সেটি পূর্ণ সময়ের না হলেও, এই কাজ তাঁকে নিজের ইচ্ছামতো সময় বজায় রেখে উপার্জন করার সুযোগ দেয়। তাই, তিনি এই কাজ করে তিনি খুবই আনন্দে আছেন।