সংক্ষিপ্ত

ক্রমশ প্রকট হচ্ছে করোনা মারণ ভাইরাসের চতুর্থ তরঙ্গ ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে রেকর্ড ভেঙেছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। তবুও বিশেষজ্ঞদের মত ডেল্টার থেকে কম ক্ষতিকারক ওমিক্রন।
 

করোনার(Corona) মত মারণ ভাইরাসের হাত থেকে কবে সম্পূর্ণরূপে এই বিশ্ববাসী মুক্তিলাভ করবে তা সকলেরই অজানা। ডেল্টা(Delta Varient) ভ্যারিয়েন্টে গোটা বিশ্বে যে কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তার সাক্ষী প্রতিটি মানুষ। সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে বেডের ডন্য রোগীদের হাহাকার, অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করেছে কত প্রান। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সেই বিকট রূপ কত পরিবারের কাছের মানুষকে কেড়ে নিয়েছে। বেনামী হয়েছে কত না লাশ। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ক্রমশ প্রকট হচ্ছে করোনা মারণ ভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গ ওমিক্রন। গোটা বিশ্ব জুড়ে ওমিক্রন নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। ডেল্টার থেকে ওমিক্রন(Omiocron) কম ক্ষতিকর করে বিশেষজ্ঞরা দাবি(Experts Demand) করলেও ব্রিটেনে লাফিয়ে লফিয়ে বাড়ছে ওনিক্রন আক্রান্তেরর সংখ্যা। শুধু ব্রিটেন কেন, বিদেশ ফেরত অনেকের মধ্যেই ওমিক্রনের লক্ষণ রয়েছে। শিশুদের মধ্যে ওমিক্রন প্রভাব পড়ার সম্ভবনার এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তার ভাঁজ বিশেষজ্ঞমহল থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে। গত শুক্রবারই যেখানে রেকর্ড ভেঙে ব্রিটেনে(Britain) দৈনিক সংক্রমণ ৯৩ হাজার ছাড়িয়েছে, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা  প্রায় ২৫ হাজার ছুঁই ছুঁই সেই রকম কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ওমিক্রন নাকি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের(delta varient) থেকে অনেকটাই কম ক্ষতিকর। কিন্তু তাঁদের এই দাবির সঙ্গে বাস্তব চিত্রের কোনও মিল নেই বললেই চলে। 

অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শুধু আফ্রিকায় নয়, ওমিক্রন সংক্রমনের তালিকায় রয়েছে ব্রিটেন, ডেনমার্কের মত দেশগুলো। এই কঠিন আবহে বিশষজ্ঞরাও উদ্বেদগের সঙ্গে একটি প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজতে মরিয়া। কোন ভ্যারিয়েন্টে বেশী ক্ষতিকারক, ডেল্টা না ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ মত প্রকাশ করে বলেছেন, ওমিক্রনের পূর্বসূর ডেল্টা হয়তো মানব শরীরে সেরকম কোনও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলবে না বরং করোনা ভাইরাসের এই নতুন রূপের এমন কিছু বিরল শক্তি আছে যা ডেল্টার ছিল না। এদিকে  দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস-এর অধিকর্তা আদ্রিয়ান পুরেন বলেন, সমক্রমনের নিরিখে ডেল্টাকে টেক্কা দিতেই হয়তো এসেছে করোনা ভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন। অন্য়দিকে ১ লক্ষ ২০ হাজার ডেল্টা আক্রান্ত ও ১৫ হাজার সন্দেহজনক ওমিক্রন আক্রান্তের ওপর ভিত্তি করে লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের বিশেষজ্ঞরা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন।  একইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ১ হাজারেরও বেশি ডেল্টা রোগী ও ২৪ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর শারীরিক অবস্থার বিষয়়টির দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। এই ভাবে কোভিডের দুটি ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে তুলনামূলক বিচার করে ইম্পিরিয়াল কলেজের বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডেল্টা রোগীদের মতো ওমিক্রন আক্রান্তদের শরীরেও দেখা যায় উপসর্গ। তাঁদেরকেও অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি।

আরও পড়ুন-Omicron In Kolkata: ফের ওমিক্রন আতঙ্ক কলকাতায়, করোনায় আক্রান্ত লন্ডন ফেরত যুবক

আরও পড়ুন-Delhi Corona Update: ওমিক্রনের হুমকির মধ্যে দিল্লিতে ছয় মাসের রেকর্ড ভেঙে দিল করোনা

ব্রিটেনের ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে বর্তমান পরিস্থিতি যে ক্রমশ সঙ্কটজনক হচ্ছে তা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখছে না। এই হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে প্রচুর মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। গত বছর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জেরে  ব্রিটেনের যত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেই হার চলতি বছরের মৃত্যু হারকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছে বিশেষজ্ঞরা। সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতেই আপাতত নাগরিকদের বুস্টার টিকা দেওয়ার কথাই ভাবছে বরিস জনসনের সরকার। এখানেও দানা বাঁধছে প্রশ্ন, ওমিক্রন প্রতিরোধে বুস্টার টিকাও আদৌ কতটা কার্যকরী হবে।