সংক্ষিপ্ত
- করোনা আতঙ্কের মাশুল
- বেঘোরে প্রাণ গেল পরিযায়ী শ্রমিকের
- গ্রামে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ
- মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়ায়
পত্রলেখা বসু চন্দ্র, বর্ধমান: শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল, ফুলে গিয়েছিল হাত ও পা। করোনা আক্রান্ত নন তো? গ্রামবাসীদের সন্দেহের মুখে পড়ে এবার বেঘোরে প্রাণ গেল এক পরিযায়ী শ্রমিকের। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়।
আরও পড়ুন: 'ভয় থেকে ভগবান', শিলিগুড়িতে শুরু করোনা মাতার পুজো
মৃতের নাম বিশ্বজিৎ মণ্ডল। কাটোয়ার মণ্ডলহাট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বছর তেইশের ওই যুবক। বাড়তি রোজগারের আশায় মাস ছয়েক আগে রাজস্থানে যান বিশ্বজিৎ। কাজ করতেন জয়পুরের একটি হোটেলে। সেখানে জন্ডিসে আক্রান্ত হন তিনি। অন্তত তেমনই দাবি পরিবারের লোকেদের। বাড়ির লোকের বক্তব্য, রাজস্থানে ছেলের চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু উপযুক্ত ওষুধ ও পথ্যের অভাবে রোগ সারছিল না। এরইমধ্যে আবার করোনা সতর্কতায় দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। বাড়ির ফেরার জন্য ছটফট করছিলেন বিশ্বজিৎ। ভেবেছিলেন, কোনওরকমে যদি বাড়ি ফিরতে পারেন, তাহলে যত্ন ও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু তা আর হল কই! উল্টে গ্রামে ফেরাটাই কাল হল।
আরও পড়ুন: সংক্রমণের থেকে বাঁচতে 'করোনা পুজো', আজবকাণ্ড রায়গঞ্জে
কেন? জানা গিয়েছে, রবিবার রাজস্থানের জয়পুর থেকে বর্ধমানে পৌঁছন বিশ্বজিৎ। তারপর টোটোয় চেপে সোজা কাটোয়ার মণ্ডলহাট গ্রামে। ততক্ষণে রীতিমতো শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছে, ফুলে গিয়েছিল হাত ও পা। পরিবারের লোকেদের দাবি, কাটোয়া হাসপাতালে রাজস্থানে চিকিৎসার কাগজপত্র দেখানোর পর বিশ্বজিৎ-কে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু করোনা আতঙ্কে প্রতিবেশীকে ভিনরাজ্য থেকে আসা ওই যুবককে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। এমনকী, থাকতে দেওয়া হয়নি সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেও! এই টানাপোড়েনের মাঝে কেটে যায় কয়েক ঘণ্টা। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্বজিৎ। শেষপর্যন্ত কাটোয়া হাসপাতালে থেকে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বর্ধমান কোভিড হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সোমবার ভোরে মারা যান বিশ্বজিৎ মণ্ডল।