সংক্ষিপ্ত
কেরালার এক মধ্যবয়স্ক মালায়ালি যুবক নেশাকে পেশা বানিয়ে আজ সাফল্যের শিখরে। বাড়ির ছাদে হরেক রকম পদ্মের চাষ করে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করছে।
সাকসেস কি পিছে নেহি, এক্সেলেন্সকে পিছে ভাগো-- সাকসেস ঝক মার কে তুমহারি পিছে আয়গি---বলিউডের ব্লকবাস্টার মুভি থ্রি ইডিয়টসে আমির খানের সেই ফেমাস সংলাপ আজও লোকমুখে ফেরে। তবে এই সংলাপকে এবার বাস্তবায়িত করে দেখাল কেরালার (Kerala)এক যুবক। নিজের প্যাশনকে সঠিক পথে চালনা করলে সাফল্যের কতটা উচ্চশিখরে পৌঁছানো যায় সেটাই করে দেখাল এই যুবক। কর্পোরেটের টার্গেট, মিটিং আর অ্যাসাইনমেন্টের ভাড়কে কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে নিজের প্যাশন (passion) বা ইচ্ছেশক্তিতে কাজে লাগিয়ে আজ দুহাতে টাকা কামাচ্ছেন সেই যুবক। এই বিষয় একটা কথা অবশ্যই বলতে হয়, সংসারের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়ে নিজেদের ইচ্ছে বা প্যাশনকে (passion) প্রাধান্য দিতে একপ্রকার ভয় পান। কিন্তু কেরালার এই যুবক সেটাই করে দেখিয়েছেন। মালায়ালি এই যুবকের এখন মাসিক আয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা (Good Returns)। নেপথ্যে নিজের প্যাশন বা ইচ্ছেশক্তি। হ্যাঁ, বাড়ির ছাদে ভিন্নস্বাদের রকমারি পদ্ধের চাষ করে আজ মোটা টাকা উপার্জনের লক্ষ্যে সফ হয়েছেন তিনি। তাঁর বাড়ির ছাদে রয়েছে আমেরিকা থেকে শুরু করে এশিয়ান সমস্ত রকমের বাহারি পদ্মের সমাহার (lotus Cultivation)। হরেক রকমের হাইব্রিড পদ্মের চাষ করে আজ একেবারে মালামাল এই কেরালার এই মধ্যবয়সী মালায়ালি যুবক।
আজ আর্থিকভাবে উন্নিতর পথে এগনোর লক্ষ্যে কিন্তু শুরু থেকেই পদ্ম চাষের আইডিয়া তাঁর ছিল না। শুরুটা ছিল একদম অন্যরকম। দীর্ঘদিন কাতারে কর্মরত ছিলেন তিনি। কিন্তু দেশে ফেরার পর মন মতন চাকরির সন্ধান করলেও সেই চাকরি পান না। তখনই নিজের নেশাকে পেশা হিসাবে কাজে লাগানোর বুদ্ধি মাথায় আসে। প্রথমে শুধু নিজের প্যাশনের খাতিরেই গোটা ছাদ জুড়ে পদ্মের চাষ করতেন। পরের দিকে নিজের হাতে তৈরি পদ্মের ছবি সোশ্যাল সাইটে শেয়ার করতেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পদ্মের ছবি দেখে গুজরাতের একজন ভদ্রলোক তাঁর থেকে পদ্ম কেনেন। তিনিই আবার তাঁর পরিচিত আরেকজনকে সেই পদ্মের রেফার করে। এইভাবেই ব্যবসায়িক ময়দানে শুভ সূচনা হয় সেই মধ্য়বয়স্ক মালায়ালি যুবকের। তারপর আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁকে। আজ কাশ্মীর থেকে অরুণাচল ভারতের সমস্ত প্রদেশজুড়েই তাঁর চাষ করা পদ্মের চাহিদা একেবারে তুঙ্গে।
এই সাফল্যের পিছনে বিনিয়োগের পরিমান কেমন ছিল সেই বিষয় কিন্তু প্রশ্নটা সবার আগেই সকলের মনে জাগে। খুব একটা বেশি পুঁজি বিনিয়োগের (Low Investment) প্রয়োজন পড়ে না বলে জানিয়েছেন তিনি। পদ্ম চাষের জন্য যে এক একটা টিউবার লাগে সেগুলোর দাম ৫০০ টাকা। সেই সঙ্গে গাছের সার আর আনুসঙ্গিক কয়েকটা জিনিসের প্রয়োজন। সব মিলিয়ে হাজার টাকা মত খরচ পড়ে। তবে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সেটা হল প্যাশন। এই মালায়ালি যুবকের সাফল্যের পিছনে সোশ্যাল মিডিয়ার যে অভূতপূর্ব ভূমিকা রয়েছে সে কথা কিন্তু অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের মাস মাইনতে টান পড়েছে। করোনার দাপট প্রতিনিয়ত যেভাবে বেড়েই চেলেছে তাতে আগামী দিনে নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে নিজের প্যাশনকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ কীভাবে বেছে নিতে হয় তার পথপ্রদর্শক এই কেরালর মালায়ালি যুবক।