সংক্ষিপ্ত

এয়ারকন্ডিশনার তৈরির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে কেন্দ্র উৎপাদন নির্ভর উৎসাহ ভাতা প্রকল্প শুরু করেছে। ফলে আগামী দুই বছরের মধ্যে এসির দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এসি তৈরির যন্ত্রাংশের উপর উৎপাদন নির্ভর উৎসাহ ভাতা প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্র, এমনটাই বলেছেন ডাইকিন এয়ারকন্ডিশনিং ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কূলদীপক ভীরমানি। 
 

গ্রীষ্মের মরশুম (Summer) শুরুই আগেই সুখবর। দাম কমতে চলেছে এয়ারকন্ডিশনারের (AC)। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে এমনটাই জানালেন জাপানি সংস্থা ডাইকিনের (Daikin) ভারতীয় শাখা সংস্থা ডাইকিন এয়ারকন্ডিশনিং ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কূলদীপক ভীরমানি (Kuldeep Veermani)। প্রসঙ্গত, এয়ারকন্ডিশনার (AC) তৈরির যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে কেন্দ্র উৎপাদন নির্ভর উৎসাহ ভাতা প্রকল্প (Production Linked Insentive Scheme) শুরু করায় আগামী দুই বছরের মধ্যে এসির দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে (Ac Price Will Decrease Up To 10 Persent Next 2 Years)। যার ফলে পরোক্ষভাবে কমবে এয়ারকন্ডিশনারের দামও। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কূলদীপক ভীরমানি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এসি তৈরির যন্ত্রাংশের উপর উৎপাদন নির্ভর উৎসাহ ভাতা প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্র। বর্তমানে, এসির মূল যে যন্ত্রাংশ অর্থাৎ কম্প্রেশর, সেটি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, বিশেষ করে চিন থেকে আমদানি করতে হয়। এছাড়াও  পিসিবি প্যানেল এবং মোটর আমদানির কারণে সংস্থাগুলির উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে ভারতেই কম্প্রেশর, পিসিবি এবং মোটর উৎপাদন করলে সেই খরচ প্রায় পাঁচ থেকে সাত শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। একইসঙ্গে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে এসির জন্য প্রয়োজনীয় টিউব, অ্যালুমিনিয়াম কয়েল দেশেই তৈরি শুরু করেছে ৩০টি সংস্থা। এর ফলে সার্বিক ভাবে উৎপাদন খরচ দশ শতাংশের মতো কমে যাবে (Will Decrease Production Price)।  যার ফলস্বরুপ কমবে এসির দাম (AC Price), আর উপকৃত হবে  গ্রাহকরা। 

চলতি অর্থবর্ষের তুলনায় আসন্ন গ্রীষ্ম এসি-র চাহিদা (Ac Cost) আরও অনেকটা বাড়বে আর তার ফলে বিক্রিবাটার পরিমানও বাড়বে বলে মনে করছেন ডাইকিনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কূলদীপক ভীরমানি। অন্যদিকে পূর্বাঞ্চলে ডাইকিন ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর কুণাল বসু মনে করছেন, এসি যে শুধুমাত্র বিলাসিতার সামগ্রী নয়, এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য কেন্দ্র শীঘ্রই সেই উপলব্ধি করবে মানুষ। তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই এসির উপর জিএসটি হার বর্তমান ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করার আর্জি জানানো হয়েছে। কেন্দ্র এই প্রস্তাব মেনে নিলে সংস্থাগুলির পক্ষে এসির দাম আরও কমানো সম্ভব হবে এবং সে ক্ষেত্রে চাহিদাও আরও বাড়বে। ডাইকিন সংস্থার আশা, চলতি অর্থবর্ষে ১০ লক্ষ রুম এসি বিক্রির লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে। আসন্ন গ্রীষ্মে  ১৩ লক্ষ এসি বিক্রি করা সম্ভব হবে মনে করছেন ডাইকিনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কূলদীপক ভীরমানি। উল্লেখ্য,  ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সংস্থার মোট বিক্রির পরিমাণ ৫,০০০ কোটি টাকা হলেও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তা কমে ৪,৩০০ কোটি টাকা হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে এই সংস্থার মোট বিক্রি পৌঁছেছে ৫২০০ কোটি টাকায় এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে সেই টাকার অঙ্ক ৬ হাজার কোটিতে পৌছাবে বলে আশাবাদী তিনি। সব মিলিয়ে এই রাজ্যে মোট বিক্রির পরিমান হবে ২৫০ কোটি টাকা। 

আরও পড়ুন-ঠাণ্ডার আশায় এসি-তে আশ্রয়, মাথায় রাখুন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

আরও পড়ুন-বিনা এসিতেই ঘর বরফ ঠাণ্ডা, রইল মোক্ষম দাওয়াই

আরও পড়ুন-যোগী রাজ্যে ঠান্ডা হাওয়া খেতে গিয়েই বিপত্তি, এসি মেশিন থেকে বেরিয়ে এল ৪০ টি সাপের বাচ্চা

অন্ধ্রপ্রদেশের একটি শহরে ৭৫ একর জমির উপর এসি এবং যন্ত্রাংশ নির্মাণের নতুন কারখানা তৈরি করছে ডাইকিন। প্রথম দফায় বিনিয়োগ  ১ হাজার কোটি টাকা। প্রাথমিক ভাবে এই কারখানায় ২০ লক্ষ কম্প্রেশর তৈরি করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে তা বাড়িয়ে তা ৪০ লক্ষে নিয়ে যাবে ডাইকিন। ঘরোয়া চাহিদা মেটানোর পর বিদেশেও তাদের নিজস্ব সংস্থা এবং অন্য সংস্থাগুলোতে রপ্তানি শুরু করতে চায় জাপানি সংস্থাটি।