সংক্ষিপ্ত

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আর্থিক ক্ষেত্রে ডিজিটাল লেনদেনের (Digital Financial Transactions) সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খুচরো আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে জালিয়াতির সংখ্যাও। কীভাবে এটিএম জালিয়াতদের হাত থেকে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ রক্ষা করবেন সাধারণ মানুষ, কী জানালো ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank of India)?
 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল (Digital Financial Transactions) পদ্ধতির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে একদিকে উপভোক্তাদের সুবিধা হয়েছে এবং একইসঙ্গে এই বদল, দেশের নাগরিকদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির (Financial Inclusion) জাতীয় লক্ষ্য পূরণেও ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। তবে, ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে খুচরো আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে জালিয়াতির সংখ্যা। সাধারণ, সাদাসিধে মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা প্রযুক্তিভিত্তিক আর্থিক ইকো-সিস্টেমের (Techno-Financial Eco-system) সঙ্গে খুব একটা সড়গড় নন, তাদের  কষ্টার্জিত অর্থ চুরি করার জন্য অভিনব সব কৌশল ব্যবহার করছে জালিয়াতরা। 

কীভাবে, এই জালিয়াতদের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখবেন, নিজেদের সম্পদ? সম্প্রতি, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (Reserve Bank of India) পক্ষ থেকে প্রতারকরা যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করে, সেগুলি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এবং আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সুরক্ষার বিষয়ে কিছু নির্দেশিকা প্রদানকারী একটি নথি প্রকাশ করা হয়েছে। আরবিআই-এর দাবি, সেই পদ্ধতিগুলি মেনে চললেই ডিজিটাল পরিসরে সুরক্ষিত রাখা যাবে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ।

এটিএম কার্ড স্কিমিং (ATM card skimming)

আরবিআই জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই প্রতারকরা এটিএম মেশিনে স্কিমিং ডিভাইস (ATM Skimming Devices) লাগিয়ে রাখে এবং তার মাধ্যমে উপভোক্তার কার্ড থেকে তথ্য চুরি করে। নথি অনুসারে, ব্যবহারকারীদের পিন চুরি করা হয় একটি ডামি কি-প্যাড এবং একটি ছোট বা পিনহোল ক্যামেরা ইনস্টল করে। ক্যামেরাটি অবশ্যই সাধারণ দৃষ্পথের বাইরে, ভালভাবে লুকানো থাকে। এরপর, প্রতারকরা ওই এটিএম-এর কাছাকাছিই দাঁড়িয়ে থাকে অন্য উপভোক্তার ভান করে। আসল উপভোক্তা যখন ওই এটিএম-এ পিন নম্বর প্রদান করেন, তক্ষণি, প্রতারকরাও সেই নম্বরটি জেনে যান। ওই তথ্য দিয়ে এরপর একটি নকল কার্ড তৈরি করা হয় এবং সেই কার্ড ব্যবহার করে ওই উপভোক্তার অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ তুলে নেওয়া হয়। 

কীভাবে এই এটিএম কার্ড স্কিমিং-এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে (How to protect yourself from ATM card skimming)? 

আরবিআই জানিয়েছে, এটিএম কার্ড স্কিমিং-এর মতো আর্থিক প্রতারণা প্রতিরোধ করতে গেলে প্রধানত তিনটি পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে। 

প্রথমত, কোনও এটিএম-এ ঢুকে লেনদেন শুরু করার আগে, উপভোক্তাদের যাচাই করে নিশ্চিত করতে হবে যে, ওই এটিএম মেশিনের কার্ড স্লট বা কীপ্যাডের কাছে কোনও অতিরিক্ত ডিভাইস বা যন্ত্র সংযুক্ত নেই।

দ্বিতীয়ত, কি-প্যাডে এটিএম পিন দেওয়ার সময়, অন্য হাত দিয়ে কীপ্যাডটিকে ঢেকে রাখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে, উপভোক্তা যদি কার্ড স্কিমিং-এর কোনও ক্যামেরা লাগানো আছে কিনা, তা বুঝতে ব্যর্থও হন, পিন নম্বর তাতে ধরা পড়বে না। 

তৃতীয়ত, এটিএম ব্যবহার করার সময় যদি অন্য কোনও ব্যক্তি উপভোক্তার কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে তাঁর উপস্থিতিতে এটিএম পিন লেখা উচিত নয়। আগেই বলা হয়েছে, অন্য উফভোক্তার ভান করে প্রতারকরা কাছাকাছি দাঁডিয়েই পিন নম্বর সংগ্রহ করে। হাত দিয়ে ঢাকার পরও যদি কোনওভাবে পিন নম্বর সেই ক্যামেরায় উঠে যায়, তাহলেও কাছাকাছি না থাকলে প্রতারক সেই নম্বর পাবে না। একইসঙ্গে আরবিআই জানিয়েছে, শত অসুবিধায় পড়লেও এটিএম কার্ডটি অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।