সংক্ষিপ্ত

কোভিড-১৯ মহামারি (Covid-19 Pandemic) এবং লকডাউনে (Coronavirus Lockdowns) মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে শিশুদের। সম্প্রতি, কর্ণাটকে (Karnataka) পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিশুদের পড়া এবং লেখার মতো মৌলিক দক্ষতাও হারিয়ে গিয়েছে।
 

কোভিড-১৯ মহামারি (Covid-19 Pandemic) এবং তা ঠেকাতে লকডাউন (Coronavirus Lockdowns) - সারা বিশ্বের মানুষের জীবনেই এই জোড়া ধাক্কার প্রভাব পড়েছে। তবে, সবথেকে বেশি ক্ষতি সম্ভবত হয়েছে শিশুদের। সম্প্রতি, কর্ণাটক (Karnataka), তেলেঙ্গানা (Telangana) এবং তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বর্তমানে শিশুরা অত্যন্ত মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে। মহামারি এবং লকডাউনের জাতাকলে পড়ে, তাদের পড়া এবং লেখার ক্ষমতার মতো মৌলিক দক্ষতাও হারিয়ে গিয়েছে।

ন্যাশনাল কোয়ালিশন অন দ্য এডুকেশন ইমার্জেন্সি বা এনসিইই (National Coalition on the Education Emergency) কর্তৃপক্ষ এই সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এই বিষয়ে, 'ক্রাইস অফ অ্যাঙ্গুইশ' (Cries of Anguish) (বাংলা অর্থ যন্ত্রনার কান্না) শিরোনামে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে তারা। আর তাতেই ধরা পড়েছে, কীভাবে করোনা ও লকডাউন প্রভাবিত করেছে শিশুদের মনন ও দীবনকে। কর্ণাটকের দুটি জেলায় পরিচালিত এই সমীক্ষায় ১০২ টি পরিবার থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গ্রামীণ ও শহুরে এলাকার, বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত পটভূমির মোট ১৭৬ জন শিশু এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ।

কী দেখা গিয়েছে সমীক্ষায়? বেশিরভাগ অভিভাবকই তাঁদের সন্তানদের লেখাপড়ার দক্ষতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অধিকাংশ বাবা-মাই বলেছেন, মহামারির শুরুর সময় থেকে তাঁদের সন্তানদের লেখা-পড়ার দক্ষতার কোনও উন্নতি ঘটেনি, কেউ কেউ আবার বলেছেন অবনতি ঘটেছে। মজার বিষয় হল, বেসরকারি স্কুলে পাঠরত শিশুদের ৫৯ শতাংশের অভিভাবকরা এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তবে, সরকারি স্কুলে এই অভিযোগের সংখ্যা অনেক বেশি, ৮০ শতাংশ।

বাবা-মায়েরা জানিয়েছেন, মহামারি আসার পর থেকে তাঁদের সন্তানদের জীবনে স্নান-খাওয়ার মতো দৈনন্দিন রুটিন ও শৃঙ্খলার অভাব দেখা দিয়েছে। শিক্ষার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং আগ্রহের অভাব দেখা দিয়েছে। কোনও বিষয়েই তারা ফোকাস করতে পারছেন না, অর্থাৎ মনোসংযোগেরও অভাব দেখা দিচ্ছে। আর সেইসঙ্গে লকডাউনের সময় অনলাইন ক্লাস (Onlive Classes) শুরু হওয়ার পর থেকে শিশুদের মধ্যে মোবাইল ফোন, ভিডিও গেমস এবং টিভির মতো বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রতি আসক্তি দেখা দিয়েছে। এমনকী, তাদের খাদ্যাভ্যাস বদলে গিয়েছে। তারা অত্যধিক মানসিক চাপ এবং একাকীত্বে ভুগছে।

এনসিইই-র প্রতিবেদন অনুসারে, এর অন্যতম কারণ হল, অধিকাংশ বাড়িতেই শিশুদের তত্ত্বাবধানের অভাব রয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৮১ শতাংশেরই বাবা-মা'কে শ্রম বা কৃষির কাজের জন্য  বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হয়। অভিভাবকদের অধিকাংশই বাড়ির বাইরে কাজ করেন। ফলে, বাড়িতে বাচ্চাদের তদারকি করার মতো কেউ থাকে না। এর পাশাপাশি, শিশুদের এই অবস্থার পিছনে অনলাইন ক্লাসের অভাব বা যেভাবে অনলাইন ক্লাস পরিচালিত হয়েছে, তারও দায় রয়েছে। বিশেষ করে যারা শুধুমাত্র ফোন ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাস করে এবং ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা রয়েছে, সেইসব ক্ষেত্রে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধায় পড়েছে শিশুরা।