সংক্ষিপ্ত

৫ দিন আগে ভারত ছেড়েছে দেশের প্রথম ওমিক্রন (Omicron) রোগী। কর্ণাটক (Karnataka) সরকার জানিয়েছে, অপর রোগীর সংস্পর্শে আসা ৫ জন করোনা পজিটিভ।

বৃহস্পতিবারই, প্রথমবারের মতো ভারতে সনাক্ত হয়েছে সার্স-কোভ-২ (SARS-Cov-2) ভাইরাসের ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Union Health Ministry) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কর্ণাটকে (Karnataka) দুই কোভিড পজিটিভ রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিং-এ ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট মিলেছে। এবার আতঙ্ক বাড়িয়ে বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে বা বিবিএমপি (BBMP) জানিয়ে দিল, সেই দুই ওমিক্রন-সংক্রমিত রোগীর মধ্যে একজন, গত ২৭ নভেম্বরই ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছেন। 

কোথায় গেলেন তিনি? বিবিএমপি-র পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির ভ্রমণের পুরো তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ৬৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি, গত ২০ নভেম্বর, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে এসেছিলেন। ৭ দিন পরই তিনি ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে চলে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি এর আগে করোনভাইরাস ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই নিয়েছিলেন। ৭ দিন ভারতে ঘুরে যে তিনি আরব আমিরশাহিতে (UAE) চলে গেলেন, এতে করে ভারতে কী ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে? 

বেঙ্গালুরু মিউনিসিপ্যাল ​​কর্পোরেশন জানিয়েছে, ওই যাত্রী গত ২০ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে ভারতে এসেছিলেন। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিং এবং বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা করা হয়। ওইদিনই তিনি শহরের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। পরে, পরীক্ষার রিপোর্ট আসলে জানা গিয়েছিল, তিনি করোনা পজিটিভ। এরপর সরকারি ডাক্তার তাঁর শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই হোটেলে যান। তবে সেইসময় তাঁর দেহে করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না। তাঁকে হোটেলের ঘরেই স্ববিচ্ছিন্নতায় থাকতে বলা হয়েছিলব। 

২২ নভেম্বর ফের তাঁর করোনা পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই নমুনা পাঠানো হয়েছিল জিনোমিক সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য। এর পরের দিন ওই করোনা রোগী একটি বেসরকারি ল্যাবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। সেই পরীক্ষার ফল এসেছিল নেতিবাচক। 

ওই ব্যক্তির প্রাইমারি কন্ট্যাক্ট ছিলেন ২৪ জন। অর্থাৎ সরাসরি তাঁর সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন ২৪ জন। আর সেকেন্ডারি কন্ট্যাক্ট, অর্থাৎ প্রাইমারি কন্ট্যাক্টদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তেমন লোকের সংখ্য়া ছিল ২৪০ জন। ২২ এবং ২৩ তারিখে রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের দল এই সকলের করোনা পরীক্ষা করায়। সকলেই উপসর্গবিহীন ছিলেন এবং তাদের পরীক্ষার ফলও নেগেটিভ আসে। 

সমস্যা হল, এরপরই বেসরকারি ল্যাবের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে, ওই ব্যক্তি ২৭ তারিখ মাঝরাতে হোটেল থেকে চেক আউট করেন। একটি ট্যাক্সি নিয়ে তিনি সোজা বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে চলে যান। সেখান থেকে উড়ান ধরে রওনা দেন দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে।  

তবে, নয়াদিল্লিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছিলেন, দুই রোগীর দেহেই হালকা উপসর্গ রয়েছে। তাদের সমস্ত প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি যোগাযোগদের সময়মতো সনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওমিক্রন নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ারও প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ করে ওই রোগীর দেশ ছাড়ায় ভারতে এই নতুন ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়তে পারে কিনা, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। 

তবে, অপর যে ৪৬ বছর বয়সী পুরুষের দেহে ওমিক্রনের সন্ধান মিলেছে, তাঁর সংস্পর্শে আসা তিনজন প্রাইমারি কন্ট্যাক্ট এবং দুজন সেকেন্ডারি কন্ট্যাক্ট ইতিমধ্যেই কোভিড পজিটিভ হিসাবে সনাক্র হয়েছেন। সকলকেই বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বৃহত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে, পাঁচজনেরই লালারসের নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। পৌরসভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা সেই রিপোর্ট আসার অপেক্ষায় আছেন।