সংক্ষিপ্ত
মহারাষ্ট্র থেকে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট (Omicron Variant) নিয়ে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) দুই ব্যক্তির দেহে রয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের (Novel Coronavirus) নতুন বিকল্প। তাঁরা কিন্তু কোনও বিদেশ ভ্রমণ করে ফেরেননি বা কোনও বিদেশ ফেরতের সংস্পর্শে আসেননি, তাঁরা ফিরেছিলেন ।
আর ঝুঁকি পূর্ণ বিদেশি রাষ্ট্র বা অ্যাট রিস্ক দেশ নয়, এবার ভারতের এক রাজ্য থেকেই আরেক রাজ্যে ছড়াতে শুরু করল করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট (Omicron Variant)। শুক্রবারই ভারতের মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। রাতের দিকে, উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) থেকেও সেই রাজ্যের প্রথম ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা রিপোর্ট করা হল। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা গিয়েছে গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) দুই ব্যক্তির দেহে রয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের (Novel Coronavirus) নতুন বিকল্প। তাঁরা কিন্তু কোনও বিদেশ ভ্রমণ করে ফেরেননি বা কোনও বিদেশ ফেরতের সংস্পর্শে আসেননি, তাঁরা ফিরেছিলেন মহারাষ্ট্র থেকে।
উত্তরপ্রদেশ স্বাস্থ্য় বিভাগ জানিয়েছে, আক্রান্ত দুই জনের একজন ৬০ বছর বয়সী এক পুরুষ এবং অপরজন এক মহিলা। তাঁরা দুজনেই গত ২৯ নভেম্বর মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। গত ২ ডিসেম্বর তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তারপরই তাদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করানো হয়, তাতে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট ধরা পড়েছে। তবে, তাঁদের দুজনের কারোরই দেহে কোনও উপসর্গ নেই, তাঁরা হোম আইসোলেশনেই রয়েছেন।
শুক্রবার ভারতের ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ অতিক্রম করেছে। এদিন রাতে তেলেঙ্গানা (Telengana) থেকে আরও দুটি ওমিক্রন সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। ফলে এই রাজ্যে, ওমিক্রন আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটে। আক্রান্তরা সকলেই বিদেশ থেকে আগত। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের (Community Tansmission) ঘটনা এখনও দেখা যায়নি। কেরলও, শুক্রবার কোভিড-১৯'এর ওমিক্রন রূপান্তরের দুটি নতুন কেসের কথা জানিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে এর্নাকুলামে (Ernakulam) আসা এক পৌঢ় দম্পতির দেহে নতুন রূপান্তর মিলেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ (Veena George) বলেছেন, রাজ্যে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা এখন সাত।
শুক্রবার, দিল্লিতে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল (Lav Agarwal) বলেছিলেন, ভারতে এখনও ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের আধিপত্য দেখা যাচ্ছে না। তাই, ওমিক্রনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্তদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে বা ভ্রমণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটেছে। এমন এক বা দুটি ঘটনা রয়েছে, যেখানে এই জাতীয় কোনও ইতিহাস পাওযা যায়নি। তার মানে এই নয়, তাঁরা অজান্তে কোনও বিদেশ ওমিক্রন আক্রান্তের সংস্পর্শে আসেননি।
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ক্রমবর্ধমান ওমিক্রন কেসের প্রেক্ষিতে, অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এবং জনসমাবেশ-ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলা এবং নামমাত্র আয়োজনে নববর্ষ উদযাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লব আগরওয়াল বলেছেন, গত ২০ দিন ধরে দৈনিক নতুন কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ১০,০০০-এর নীচে রয়েছে। তবে, নতুন ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের বিপদ বুঝে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যান্য দেশে এই রূপান্তরের সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ওমিক্রন ভেরিয়েন্টটি ইউরোপ এবং বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আইসিএমআরের ডিরেক্টর ডাক্তার বলরাম ভার্গবও (Dr. Balaram Bhargava) বলেছেন, নতুন বছরের উদযাপন কম তীব্রতায় করতে হবে। ওমিক্রনকে মানুষ হালকাভাবে নিচ্ছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক উদ্বিগ্ন বলে জানান, লব আগরওয়াল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও (WHO) -কে উদ্ধৃত করে, তিনি জানিয়েছেন, ওমিক্রন যে দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে, তা করোনার আগের কোনও রূপের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।