সংক্ষিপ্ত
করোনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না পুলিশকর্মীরাও। আক্রান্ত হলেন কলকাতা পুলিশের আরও ১৩ জন আধিকারিক। সবমিলিয়ে কলকাতা পুলিশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩।
রাজ্যে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার (Corona) সংক্রমণ। এক সপ্তাহের মধ্যেই দৈনিক সংক্রমণ (Daily Corona Cases) ৪৩৯ থেকে বেড়ে ৬ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। বড়দিনের পর থেকেই রাজ্যে সংক্রমিতের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আর ক্রমশই রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে করোনার গ্রাফ (Corona Graph)। করোনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না পুলিশকর্মীরাও (Police Personnel)। আক্রান্ত হলেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) আরও ১৩ জন আধিকারিক। সবমিলিয়ে কলকাতা পুলিশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩। জানা গিয়েছে, যে ১৩ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বড়দিন (Chirstmas) এবং বর্ষবরণে পার্ক স্ট্রিটে (Park Street) ডিউটি দিয়েছিলেন। ফলে সেখান থেকেই ছড়িয়েছে সংক্রমণ।
একের পর এক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন প্রথম শ্রেণির করোনা যোদ্ধারা। তার মধ্যে রয়েছেন পুলিশ ও চিকিৎসকরা। দিনকয়েক আগেই কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকজন আধিকারিকের শরীরে করোনাভাইরাসের হদিশ মিলেছে। আর রবিবার আরও ১৩ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলেন। সূত্রের খবর, ওই সময়ের মধ্যে এক আইপিএস অফিসারও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন- করোনার হাত থেকে রেহাই পেল না চিত্তরঞ্জন সেবাসদন, চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী সহ আক্রান্ত ৩৬
বড়দিন ও বর্ষশেষের রাতে মানুষের ঢল নেমেছিল পার্কস্ট্রিটে। রাত পর্যন্ত সেখানে উৎসবে সামিল হয়েছিল বহু মানুষ। বড়দিনের তুলনায় বর্ষশেষের রাতে ভিড় কিছুটা হলেও কম ছিল। আর ওই দু'দিনই সেখানে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। সেই ভিড়ের মধ্যেও পুলিশের তরফে করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু, তার মধ্যেও মাস্ক ছাড়াই দেখা গিয়েছিল বহু মানুষকেই। ফলে সেখান থেকেই সংক্রমণ আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- এক সপ্তাহের মধ্যে ৪৩৯ থেকে ৬১৫৩, রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ
এই সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার থেকে রাজ্যে জারি হচ্ছে কড়া বিধিনিষেধ। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে। যে সব বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে সেগুলি হল...
- ১) সোমবার থেকে বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু থাকবে ৫০ শতাংশ কর্মচারীর উপস্থিতিতে
- ২) সরকারি ও বেসরকারি অফিসে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারবেন। বাকিরা বাড়ি থেকে কাজ করবেন যথাসম্ভব
- ৩) শহরের সমস্ত সুইমিং পুল, জিম, স্পা, বিউটি পার্লার, সেলুন, ওয়েলনেস সেন্টার এবং টুরিস্ট স্পট বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে পার্ক ও চিড়িয়াখানাও
- ৪) শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্স, বার, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল, ও থিয়েটার খোলা থাকবে রাত দশটা পর্যন্ত। কোনও ক্ষেত্রেই ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ এই সব জায়গায় প্রবেশ করতে পারবেন না
- ৫) সমাবেশ বা কনফারেনসের ক্ষেত্রে ২০০ জন অথবা সমাবেশ স্থানের ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ মানুষ উপস্থিত থাকতে পারেন। দুটির মধ্যে ক্ষুদ্রতর সংখ্যাটি বেছে নিতে হবে
- ৬) ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, বা সামাজিক জমায়েতে সর্বোচ্চ ৫০ জন উপস্থিত থাকতে পারেন। শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ২০ জন
- ৭) লোকাল ট্রেন চলবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত, ৫০ শতাংশ যাত্রী সমেত। মেট্রো রেলের সময়সূচি অপরিবর্তিত থাকবে, তবে যাত্রী সংখ্যা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হবে
- ৮) রাত্রি ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আপতকালীন প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে কোনোরকম সমাবেশের আয়োজন করা যাবে না
- ৯) দুয়ারে সরকার কর্মসূচী স্থগিত থাকবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত
- ১০) বিধিনিষেধ মেনে খাবারের হোম ডেলিভারির অনুমোদন করা হবে
- ১১) উপসর্গবিহীন কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে বাড়িতেই চিকিৎসা এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে
- ১২) সব ক্ষেত্রেই কোভিড বিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি কঠোরভাবে পালন করতে হবে, অন্যথা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে