সংক্ষিপ্ত
- করোনার কারনে কাজ নেই
- বেকার যুবকরা জড়িয়ে পড়ছে নেশার জালে
- কাজ না থাকায় পেটের দায়ে বাড়ছে চুরি
- গোটা গ্রাম মাদকের জালে আটকে
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে লকডাউন। বহু কষ্ট করে নিজেদের গ্রামে ফিরে এসেছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। গ্রামে আসার পর থেকেই কাজ না থাকায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তাঁরা। কাজ না থাকায় প্রথম প্রথম একটু আধটু অল্প অল্প নেশা করে সময় কাটাতো তাঁরা। আনলক হতেই অনেকে ফিরে গিয়েছিলেন ভিনরাজ্যের কাজে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই আবার শুরু লকডাউন। আবার কর্মহীনতা. বেকার জীবনযাপন।
প্রায় দেড় বছর ধরে করোনার কারনে কাজ নেই বললেই চলে, গ্রামে পঞ্চায়েতেও নেই কোনও কাজ, লকডাউনের জেরে ভিনরাজ্যেও যেতে পারছেনা রায়গঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলের যুবকেরা। ফলে হতাশা গ্রাস করেছে তাদের আর সেই হতাশা কাটাতে বেছে নিচ্ছে নেশার আশ্রয়। নেশার টাকা জোগাড় করতে বাড়িঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করা পাশাপাশি চুরির মতো অপরাধের সাথেও নিজেদেরকে জড়িয়ে ফেলছে তারা। এমনই ছবি ধরা পড়ল রায়গঞ্জ ব্লকের নোয়াপাড়া গ্রামে।
গ্রামজুড়ে যুবকদের নেশা করা আর জুয়া খেলার ছবি। নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পরিবারের লোকজন অনেকভাবে ভালো পথে আনার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছেন। দাবি উঠেছে দিকভ্রান্ত এই হতাশা ও নেশাগ্রস্ত যুবকদের কর্মসংস্থানের। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে এইসব যুবকদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য গ্রামেই কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে।
নোয়াপাড়া গ্রামটার নাম ধীরে ধীরে বদলে গিয়ে হতে বসেছে পাতা খাওয়া গ্রাম। পাতা মানে নেশার পাতা তা গাঁজা হোক বা ভাঙ কিংবা ব্রাউন সুগার বা চরস। ঘরের বাটি ঘটি বা সোনার জিনিস বিক্রি করে তা না হলে চুরি করেও জোগার করতে হবে পাতা খাওয়ার টাকা। চলতি কথায় রাংতার উপরে ব্রাউন সুগার নিয়ে নেশা করাটাকেই পাতা খাওয়া বলে। এই পাতার নেশায় মেতে উঠেছে রায়গঞ্জ ব্লকের নোয়াপাড়া গ্রামের কর্মহীন শয়ে শয়ে যুবক।
বাড়ির জিনিসপত্র বিক্রি করে কখনওবা চুরি করার মতো অপরাধ সংগঠিত করে নেশার টাকা জোগাড় করছে রায়গঞ্জের নোয়াপাড়ার যুবকরা। কেন নেশা করছেন জিজ্ঞেস করতেই সাফ জবাব, কাজ নেই কর্ম নেই কিভাবে সময় কাটবে তাই নেশায় বুঁদ হয়ে থাকছি। নোয়াপাড়ার এই নেশাগ্রস্ত যুবকদের কারনে এলাকার সামাজিক পরিবেশ বিনষ্ট হতে বসেছে। গ্রামজুড়ে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ।
নেশাগ্রস্ত যুবকের মা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন পারেননি। এটা পুলিশ প্রশাসনের দেখা উচিত। প্রশাসনের উচিত গ্রামের এই যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করার। কাজ পেলেই এরা নেশামুক্ত হবে বলে ধারনা পতিবারের লোক থেকে গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত থেকে এইসব দিকভ্রান্ত নেশাগ্রস্ত যুবকদের হতাশা কাটাতে প্রয়োজন কাজের। পঞ্চায়েত থেকে তাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য মানিক বর্মন।