সংক্ষিপ্ত
- বিধি না মেনেই করনদিঘীতে চলছে বেসরকারি স্কুল
- ভীড়ে ঠাসাঠাসি করে স্কুলে আসছে খুদে পড়ুয়ারা
- আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
- বিডিও-এসডিও সশরীরে গিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কাই এখনও সামলে উঠতে পারেনি রাজ্য তথা দেশ। আর তারই মধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন। ঠিক সেই সময়ই সরকারি বিধিনিষধের তোয়াক্কা না করে উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘী ব্লকে রমরমিয়ে চলছে বেসরকারি স্কুল।
আরও পড়ুন, কোভিডের বিরুদ্ধে ৭৭.৮ শতাংশ কার্যকর কোভ্যাকসিন, তথ্য প্রকাশ তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের
এক নয় একাধিক বেসরকারি স্কুল চালাচ্ছে করনদিঘী ব্লকের আলতাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের রাঘবপুর সহ একাধিক গ্রামে। গাদাগাদি করে ছোট ছোট ঘরে ক্লাস করার পাশাপাশি স্কুলেরই গাড়িতে ভীড়ে ঠাসাঠাসি করে স্কুলে আসাযাওয়া করছে খুদে পড়ুয়ারা। চরম আশঙ্কা ওই খুদে পড়ুয়াদের করোনা সংক্রমণের। এমনই এক বেসরকারি নার্সারি স্কুলের মালিক জানালেন কয়েকদিন ধরে তিনি খুলেছেন। যদি প্রশাসন বন্ধ করতে বলে তাহলে বন্ধ করে দেব। করনদিঘীতে বেসরকারি স্কুল খোলা প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানিয়েছেন, বেসরকারি নার্সারি স্কুল খোলার খবর পেয়েই বিডিও ও এসডিও দের দ্বারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, রাজ্যে চিঠি পাঠাল কমিশন, দ্রুত উপনির্বাচন চেয়ে পাল্টা চিঠি মমতার সরকারের
অতিমারি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশের সমস্ত স্কুল কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেশজুড়ে সেই বিধিনিষেধ কার্যকর রয়েছে। কিন্তু লকডাউনের সুযোগ নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘী ব্লকে বেশকিছু বেসরকারি নার্সারি স্কুল গজিয়ে উঠেছে এবং রীতিমতো সেইসব নার্সারি স্কুলগুলো চলছে রমরমিয়ে। করোনার তৃতীয় ঢেউ যখন প্রায় আসীন এবং শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশী সেখানে এই সময়ে কচিকাঁচাদের নিয়ে স্কুল চালানোর ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদিঘীতে। স্থানীয় তৃনমূল কংগ্রেস বিধায়ক গৌতম পাল জানিয়েছেন, দ্রুত প্রশাসনিক উদ্যোগে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘই যারা স্কুল খুলেছেন তাদের নিয়ে বৈঠকে বসে স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দেবেন তিনি।
আরও পড়ুন, 'চাবকে ওর মানসিক রোগ ছাড়ানোর ক্ষমতা আমাদের আছে', দেবাঞ্জন ইস্যুতে বিস্ফোরক অধীর
জেলার বিধায়ক তথা রাজ্যের মাদ্রাসা বিষয়ক সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য। যারা এই আইন অমান্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। বেআইনিভাবে ছত্রাকের মতো গজিয়ে ওঠা বেসরকারি নার্সারি স্কুলগুলোতে মাস্ক ছাড়া গাদাগাদি করে ক্লাসে বসা থেকে শুরু করে ভীড়ে ঠাসাঠাসি করে গাড়িতে করে স্কুলে আসাযাওয়া করছে গ্রামগঞ্জের খুদে পড়ুয়ারা। বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। রাঘবপুরের এক বেসরকারি নার্সারি স্কুলের মালিক জানালেন অনেক নার্সারি স্কুলই চলছে তাই তিনিও খুলেছেন। প্রশাসন চাইলে তিনিও বন্ধ করে দেবেন। যেখানে রাজ্য তথা দেশজুড়ে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ সেখানে কিভাবে উত্তর দিনাজপুর জেলায় একের পর এক বেসরকারি নার্সারি স্কুল গজিয়ে উঠছে এবং তা চলছেও রমরমিয়ে তা নিয়ে উত্তর দিনাজপুর।
আরও পড়ুন, ফের উর্ধ্বমুখী কোভিড সংক্রমণ কলকাতায়, চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজ্যের এই ৩ জেলা
জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিডিও ও এসডিও সশরীরে গিয়ে সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যারা স্কুলগুলো বেআইনিভাবে খুলে চালাচ্ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। দেড় বছর ধরে সমস্ত সরকারি প্রাথমিক স্কুল বন্ধ রয়েছে আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই কি গ্রামেগঞ্জে গজিয়ে উঠছে বেআইনি বেসরকারি নার্সারি স্কুল, উঠছে সে প্রশ্নও।