সংক্ষিপ্ত
ঘাটাল মহকুমাতেও প্রায় ৬৬ জন চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য কর্মী করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মহকুমার ক্ষীরপাই, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা হাসপাতালেও চিকিত্সার সমস্যা দেখা দিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Midnapur) গত এক সপ্তাহে প্রায় তিনশো চিকিত্সক (More than 300 Health Worker) ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় (Corona Virus) আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই রয়েছেন হোম আইসোলেশনে (Home Isolation)। অনেকেরই উপসর্গ রয়েছে। ফলে তারাও চিকিত্সা ক্ষেত্রে আসছেন না। জেলা জুড়ে চিকিত্সা ক্ষেত্রে সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আধিকারিকরা। তবে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
জেলাতে ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় তরঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল জেলার মধ্যে সব থেকে বড়ো চিকিত্সাক্ষেত্র। এই হাসপাতালে জেলা ছাড়াও পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকেও অনেকে চিকিত্সার জন্য এসে থাকেন। কয়েক হাজার মানুষ রোজ ভিড় করেন চিকিত্সার জন্য। অথচ এই হাসপাতালেই গত দেড় সপ্তাহে করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দুশো চিকিত্সক। যাদের বেশিরভাগই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৷ সম্প্রতি কয়েকজন সুস্থ হয়ে কাজে ফিরেছেন। এরপরেও অনেকে রয়েছেন- যাদের উপসর্গ রয়েছে। যারা কাজে আসছেন না।
এরফলে হাসপাতালে চিকিত্সক বা স্বাস্থ্যকর্মী সংকট দেখা দিয়েছে ৷ পরিস্থিতি দেখে শনিবার থেকে এই হাসপাতালের মেল মেডিসিন কোল্ড ওয়ার্ড ও ফিমেল মেডিসিন কোল্ড ওয়ার্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ইমার্জেন্সি থেকে রোগীদের এনে অবজার্ভেশনে রাখা হত। কিন্তু কর্মী সংকট বা বিভিন্ন কারনে এই দুই ওয়ার্ডের কর্মীদের স্থানন্তরিত করা হয়েছে করোনা ওয়ার্ডে।
কোল্ড ওয়ার্ড দুটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিত্সক কৃপাসিন্ধু গাঁতাইত বলেন, অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। কিছু জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। তাহলেও চিকিত্সক কর্মী সংকট রয়েছে। উল্টে চিকিত্সক কর্মীর সংকটে রোগীর ভিড় কমছে না বরং বাড়ছে। কোল্ড ওয়ার্ড এমনিতেই কনভার্ট করা হতো, তার আগেই পরিস্থিতি দেখে দুটি কোল্ড ওয়ার্ডের কর্মীদের করোনা ওয়ার্ডে পাঠিয়ে ওয়ার্ড দুটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে ঘাটাল মহকুমাতেও প্রায় ৬৬ জন চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য কর্মী করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মহকুমার ক্ষীরপাই, ঘাটাল, চন্দ্রকোনা হাসপাতালেও চিকিত্সার সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক্ষীরপাই এলাকার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীদের মধ্যে করোনার সংক্রমন হওয়াতে সেখানে ব্যাঙ্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কিছুদিনের জন্য। ফলে পরিষেবা নিয়ে হয়রান হচ্ছেন অনেকেই। সমস্যা দেখা দিয়েছে খড়্গপুর মহকুমাতেও। এই মহকুমাতে প্রায় ২০ জন চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য কর্মী করোনাতে আক্রান্ত। সমস্যা রয়েছে এখানেও। ফলে তিন মহকুমার হাসপাতালেই বেশ কিছু অপারেশনের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রোগীরা জানাচ্ছেন।