সংক্ষিপ্ত

করোনার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে উদ্য়োগী গোটা বিশ্বের মানুষ

আর তিনি যেচে নিজের দেহে করোনাভাইরাস ঢোকাতে চেয়েছিলেন

কেনন এমন ইচ্ছে হয়েছিল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর

ফাঁস করলেন তাঁর একসময়ের প্রধান সহযোগী ডমিনিক কামিংস

 

ক্যামেরার সামনেই নিজের দেহে যেচে করোনাভাইরাস প্রবেশ করাতে চেয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের (United Kingdom) প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন (Boris Johnson)। বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এই অদ্ভূত তথ্য প্রকাশ করলেন বরিস জনসনের একসময়ের শীর্ষস্থানীয় সহযোগী ডমিনিক কামিংস (Dominic Cummings)। শুধু তাই নয়, সংসদে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট ভাষায় তিনি অভিযোগ করেছেন, ব্রিটেনে যখন  করোনাভাইরাসের প্রথম তরঙ্গ আঘাত হেনেছিল, সেইসময় এই মহামারি রোধে বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রী জনসন কোনও কাজই করেননি।

কিন্তু, নিজের দেহে কেন করোনাভাইরাস ইনজেক্ট করতে চেয়েছিলেন তিনি? কামিংস-এর দাবি, শুরুতে করোনা মহামারিকে গুরুত্বই দেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তিনি মনে করতেন এটা সোয়াইন ফ্লু-এর মতোই আরও একটি সাধারণ জ্বর। করোনা সংক্রান্ত বৈঠকে সরকারি আধিকারিকদের তিনি তাইই বলতেন। সেইসঙ্গে একবার তিনি বলেছিলন, করোনা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এমনকী, সকলকে এই বার্তা দিতে জনসন, সরাসরি টিভি সম্প্রচারে ব্রিটিশ চিফ মেডিকেল অফিসার ক্রিস হুইটি (Chris Whitty)-কে দিয়ে নিজের শরীরে করোনাভাইরাস ইনজেক্ট করতে অর্থাৎ ইনজেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দিতেও চেয়েছিলেন। করোনার বিপদ নিয়ে এতটাই অবিশ্বাসী ছিলেন তিনি।

কামিংস-এর মতে, করোনা কতখানি ভয়ঙ্কর, তা বরিস জনসন প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন ২০২০  সালের এপ্রিল মাসে। ওই সময় তিনি নিজেই করোনা সংক্রামিত হয়েছিলেন। প্রথমে হোম আইসোলেশনে থাকলেও পরে তাঁকে আইসিইউ-তে ভর্তি করতেহয়েছিল। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরই তিনি ব্রিটেনে মহামারি রুখতেকঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু, তার মধ্যে তাঁর অবিশ্বাসের খেসারত দিতে হয়েছিল বহু মানুষকে। করোনায় এখনও পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ১ লক্ষ ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে আছে তারা।

আর, করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ ঘিরে, আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) পর দারুণ রাজনৈতিক চাপে পড়েছেন বরিস জনসন-ও। তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, ২০২০ সালের গোড়ায় চিন থেকে যখন সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছিল, সেই সময় করোনা মহামারি রোধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বড্ড দেরি করেছিলেন তিনি। এখন প্রাক্তন সহযোগী ফাঁস করলেন, করোনার বিপদ তিনি বুঝতেই পারেননি, বিশ্বাসই করতে চাননি এটা কোনও সাধারণ রোগ নয়।

অথচ এই ডমিনিক কামিংস-ই ২০১৮ সালে জনসনের হয়ে যুক্তরাজ্য জুড়ে ব্রেক্সিট (Brexit) প্রচার চালিয়েছিলেন। সেই প্রচারই ২০১৯ সালের নির্বাচনে দারুণ জয় এনে দিয়েছিল বরিস জনসন-কে। Bre সালের ব্রেসিত প্রচারের কৌশলটি নির্ধারণের জন্য দায়ী, তারপরে জয়ের পরে। ২০২০ সালের শেষে অবশ্য জনসনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার অবসান ঘটে। সরকারি দয়িত্ব ছেড়ে দেন তিনি। তারপর থেকে কামিংস বারবারই করোনা ঠেকাতে জনসনের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য মহামারিটির মোকাবিলার জন্য একেবারে অপ্রস্তুত ছিল, বলেই অভিযোগ তাঁর।