সংক্ষিপ্ত

'টুইন্ডেমিক' (Twindemic) অর্থাৎ জোড়া মহামারির ভয়ে কাঁপছে ইউরোপ (Europe)। ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্য়েই ফিরল ফ্লু মহামারি (Flu Epidemic)। 

'টুইন্ডেমিক' (Twindemic) অর্থাৎ জোড়া মহামারির ভয়ে কাঁপছে গোটা ইউরোপ (Europe)। একে ওমিক্রনের (Omicron) দাপটে ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণের সংখ্যা। তারই মধ্যে আবার ইউরোপে ফিরে এসেছে ফ্লু মহামারি (Flu Epidemic)। ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস সংক্রমণে এমনিতেই ইউরোপিয় দেশগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার নাজেহাল অবস্থা। তার উপর ইনফ্লুয়েঞ্জা (Influenza) বা ফ্লু ভাইরাস সংক্রমণের মাথাচাড়া দেওয়া, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, এমনই আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

করোনায় কতজনের মৃত্যু হচ্ছে, বর্তমানে সকলেই তার খবর রাখছেন। কিন্তু, অনেকেরই জানা নেই, ফ্লু ভাইরাসের প্রকোপে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী গড়ে প্রায় সাড়ে ছয় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। গত শীতে, অর্থাৎ, ২০২০-২১'এর শীতের মরসুমে গোটা বিশ্ব করোনা মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের মোকাবিলায় ব্যস্ত ছিল। তুলনায় ফ্লু সংক্রমণ অনেকটাই কম হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করছিলেন, কোভিড-১৯ অস্থায়ীভাবে ফ্লু'কে হারিয়ে দিয়েছে। তবে, ২০২১ শেষ হতে না হতেই এই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত হতে শুরু করেছিল। গত ডিসেম্বর মাস থেকেই গোটা ইউরোপ জুড়ে, 'অপ্রত্যাশিত বেশি হারে' ফ্লু ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল।

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল বা ইসিডিসি (ECDC)-র তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর মাসে ইউরোপের হাসপাতালগুলির আইসিইউ বিভাগে ফ্লু আক্রান্তের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে। ২০২১ সালের শেষ সপ্তাহে আইসিইউ-তে ভর্তি ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগীর সংখ্য়া ছিল কমপক্ষে ৪৩ জন। ইসিডিসি-র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ, দীর্ঘ সময় ধরে, ইউরোপীয় জনগণের মধ্যে ফ্লু সংক্রমণ মহামারির আকারে ছড়ায়নি। তবে, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে, স্বাভাবিক মরসুমি অসুখের নকশা থেকে বেরিয়ে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ফের বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠতে পারে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (French health ministry) তথ্য অনুসারে, প্যারিস (Paris) সহ ফ্রান্সের অন্তত তিনটি অঞ্চলে ফ্লু মহামারির রূপ নিয়েছে। 

আর একই সময়ে ইউরোপকে লড়াই করতে হচ্ছে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন রূপের বিরুদ্ধেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) পূর্বাভাস, আগামী দুই মাসের মধ্যে, ইউরোপের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ ওমিক্রন আক্রান্ত হবেন। ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (IHME) জানিয়েছে, সময় লাগতে পারে ছয় থেকে আট সপ্তাহ। ওমিক্রন ইতিবাচকের সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যে বহু ইউরোপীয় দেশে প্রয়োজনীয় পরিষেবা বিভাগগুলিতে ব্যাপক কর্মীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে।