সংক্ষিপ্ত
আইপিএল ২০২১ (IPL 2021)-এ রাজস্থান রয়্যালস (Rajasthan Royals)-কে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিল ইয়ন মর্গানের নেতৃত্বাধীন কলকাতা নাইট রাইডার্স(Kolkata Knight Riders)। ফলে প্লেঅফের টিকিট কার্যত কনফার্ম হল।
আইপিএল ২০২১ (IPL 2021)-এ রাজস্থান রয়্যালস (Rajasthan Royals)-কে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিল ইয়ন মর্গানের নেতৃত্বাধীন কলকাতা নাইট রাইডার্স। ব্যাটিং-এর সময় যদি সেরা পারফর্মার হন শুবমান গিল, তাহলে বোলিং-এ এদিন অসামান্য বোলিং-এর নজির রাখলেন কেকেআর-এর জোরে বোলাররা। বিশেষ করে শিবম মাভি এবং লকি ফার্গুসন। মাভি নিলেন ৪ উইকেট, লকি ৩। তবে এদিন কোনও একজন ক্রিকেটারের কথা আলাদা করে বলা যাবে না, দল হিসাবেই পুরো রাজস্থানকে ঝলসে দিল নাইটরা। যার ফলে কেকেআর-এর দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করে মাত্র ৭৫ রান তুলেই অলআউট হয়ে গেল আরআর।
এই জয়ের ফলে কার্যত প্লেঅফে নিজেদের জায়গা পাকা করল কেকেআর। লিগের শেষে ১৪টি ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে জিতে ১৪ পয়েন্ট পেল মর্গান বাহিনী। এদিনের বিরাট জয়ে নেট রানরেট আরও বেড়ে দাঁড়ালো +০.৫৮৭-এ। লিগের সবকটি দলের থেকে বেশি নেট রানরেটে আছে মর্গানরা। এখন কেকেআর-এর যাত্রা ভঙ্গ করতে পারে একমাত্র মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তারা ১ ম্যাচ কম খেলে আছে ১২ পয়েন্টে। নেট রানরেট -০.০৪৮। ফলে সানরাইজার্সের বিরুদ্ধে তাদের বিশাল ব্যবধানে জিততে হবে, অন্তত ১০০ রানের বেশি ব্যবধানে।
এদিন ব্যাটিং বোলিং এবং ফিল্ডিং - ক্রিকেটের তিন বিভাগেই প্রায় নিখুঁত খেলল কেকেআর। টসে জিতে সঞ্জু স্যামসন আগে বল করার সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন। শুবমান গিল (৪৪ বলে ৫৬ রান) পরপর দুটি ম্যাচে অর্ধশতরান করলেন। তিনি আর ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৩৫ বলে ৩৮) মিলে ১১ ওভারে ৭৯ রানের জুটি গড়ে দিয়েছিলেন। সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে শেষ ৯ ওভারে ৯২ রান তুলেছিলেন বাকি ব্যাটাররা। নীতিশ রানা (৫ বলে ১২), রাহুল ত্রিপাঠী (১৪ বলে ২১), দীনেশ কার্তিক (১১ বলে ১৪*) এবং ইয়ন মর্গান (১১ বলে ১৩*) - কেউই খুব বড় রান না করলেও, হাত খুলে মারলেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭১ রান তুলেছিল কেকেআর।
শারজায় কিন্তু এদিনের পিচ মোটেই ব্যাটিং-এর জন্য সুবিধার ছিল না। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, প্রথম ইনিংসের পর জানিয়েছিলেন পিচটা ডাবল পেসড। অর্থাৎ, কোনও বল জোরে হবে, কোনও বল আস্তে। কোনওটা লাফাবে, কোনওটা নিচু হবে। আর সেই পিচেই শারজায় চলতি আইপিএল মরসুমের সবথেকে বড় স্কোর খাড়া করেছিল কেকেআর।
আর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রাজ করলেন কেকেআর জোরে বোলাররা। একেবারে প্রথম ওভার থেকে উইকেট ফেলতে শুরু করেছিলেন কেকেআর জোরে বোলাররা। যদিও শুরুটা করেছিলেন সাকিব-আল-হাসান। রাসেলের জন্য কেকেআরের প্রথম দলে সুযোগ পাননা, কিন্তু, পেলেই কিছু না কিছু করে দেখান সাকিব। এদিনও তিনি প্রথম ওভারেই আরআর-এর ফর্মে থাকা ওপেনার যশশ্বী জয়সওয়ালকে (০) ফিরিয়ে রাজস্থানকে জোর ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। রান দিলেন মাত্র ১।
পরের ওভার থেকেই ব্য়াটনটা হাতে তুলে নিয়েছিলেন শিবম মাভি (৩.১-২১-৪) এবং লকি ফার্গুসন (৪-১৮-৩)। ডাবল পেসড উইকেটে ক্রমাগত গতির হেরফের করে অতিষ্ট করে মারলেন রয়্যালস-এর ব্যাটারদের। এদিন আইপিএল-এ নিজের সেরা বোলিংটি করলেন শিবম মাভি। মাভি ফেরালেন সঞ্জু স্যামসন (১), শিবম দুবে (১৮), গ্লেন ফিলিপস (৮) এবং রাহুল তেওযাটিয়া (৩৬ বলে ৪৪)কে। আর লকির সংগ্রহে লিয়াম লিভিংস্টোন (৬), অনুজ রাওয়াত (০) এবং জয়দেব উনাদকাটের (৬) উইকেট। দুর্দান্ত বল করলেন রহস্য স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীও (৪-১৪-১)। বোলারদের মধ্যে দিনটা ততটাও ভাল গেল না একমাত্র সুনীল নারাইনের (৪-৩০-০)।
আলাদা করে বলতে হবে কেকেআর-এর ফিল্ডিং-এর কথাও। একটিও ক্যাচ তো মিস হলই না, উল্টে বাড়তি উদ্দীপনা দেখা গেল অন্য়ান্য বল আটকানোর ক্ষেত্রেও। ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আসার সময় কেকেআর ছিল ৭ নম্বরে। ৭ ম্যাচ খেলে জিতেছিল মাত্র ২টিতে। আর মরুদেশে আসার পর ৭ ম্যাচ খেলে নাইটরা জিতল ৫টিতে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবারের ম্যাচে নাইটদের খেলায়, শরীরী ভাষায় যে প্রত্যয় দেখা গেল, তাতে কিন্তু প্লেঅফের উপরের দিকে থাকা দলগুলিকে সতর্ক থাকতে হবে। এই নাইটরা ভয়ঙ্কর।