সংক্ষিপ্ত
অম্বরীশকে অমিতাভ বলেছিলেন, ফোনকে আপডেট করতে হয় প্রতি মুহূর্তে। তবেই সে সচল। তেমনি মানুষের মন, স্মৃতিকেও ঝালিয়ে নিতে হয় সফটওয়্যারের মতো। তারপরেই পাল্টা প্রশ্ন অম্বরীশের, এই ভাবনা যাঁর তিনি কোনও দিন বৃদ্ধ হতে পারেন?
গত বছরেও বলিউড শাহেনশার ৭৯তম জন্মদিনে তাঁর ফোনে ওঁর জবাবি বার্তা! এ বছরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ৮০-তে পা দেওয়া অমিতাভ বচ্চনকে অম্বরীশ ভট্টাচার্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জবাব এসেছে নির্দিষ্ট সময়ে। অমিত ভোলেননি অম্বরীশ ভট্টাচার্যকে! আক্ষরিক অর্থেই কি তিনি চোখে হারান বাঙালি অভিনেতাকে? এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রশ্ন ছিল ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতার কাছে।
জবাবে তিনি জানালেন, ওঁর স্মৃতিশক্তি প্রখর। যখনই দেখা হয়, অম্বরীশের ভয় হয়, বোধহয় মনে নেই তাঁকে। নির্ঘাৎ ভুলে গিয়েছেন। প্রতি বার উল্টোটাই হয়। পাশে বসে কথা বললেই, গড়গড়িয়ে চার বছর আগের স্মৃতি নিমেষে ছড়িয়ে দেন! অমিতজির কথায়, স্মৃতিরাই এখন তাঁর কাছের মানুষ। তা ছাড়া, কলকাতার প্রতি অমিতাভের দুর্বলতা রয়েছে। তাঁর প্রথম কর্মস্থল। অম্বরীশ সেই শহরের মানুষ, বাঙালি অভিনেতা। তাঁর প্রিয় শহরের গল্প বলেন তাঁকে। ফলে, অমিতাভের মনে থেকেই যান তিনি। আর সব বয়সের সহ-অভিনেতাকেই মনে রাখেন ‘শাহেনশা’। সম্মান করেন। অভিনেতার কথায়, এটাই মহত্ত্বের লক্ষ্মণ।
একবার নয়! দু-দু’বার অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা তাঁর। প্রথম দেখেছিলেন, ২০১৮-য়। পরিচালক প্রদীপ সরকারের সৌজন্যে। তাঁর এক বিজ্ঞাপনী ছবিতে তাঁরা সহ-অভিনেতা। তখন টলিউড অভিনেতা খেয়াল করেছিলেন, ‘অ্যাকশন’ আর ‘কাট’-এর মাঝে অমিতাভ একেবারে অন্য মানুষ। ক্যামেরা থামলেই তাঁর সেই টানটান ভাব উধাও। যেন ঠিক পাশের বাড়ির জ্যাঠা, কাকা বা দাদু। পরিচালক ‘রোল’ বললেই অমিতজিই যেকেসেই। যেন ‘দিওয়ার’ বা ‘অগ্নিপথ’-এর অমিতাভ। শটের শেষে ফের ঝুঁকে পড়েন। হয়ত সামান্য হাঁফানও। একটু চেয়ারে বসেন।
৮০-তে পৌঁছনো ‘ভগবান’ কি তা হলে বৃদ্ধ হয়েছেন?
‘বৃদ্ধ’ শব্দে তীব্র আপত্তি অম্বরীশের। তাঁর কথায়, ‘‘একমাত্র এই মানুষটির কাছেই বয়স নিছকই সংখ্যা। কালের নিয়মে তিনি ৮০। আমার মনে হয়, প্রতি দিন তাঁর বয়স একটু করে কমছে। সুকুমার রায়ের লেখার মতো, ‘বয়স বাড়তি না কমতি!’ তা ছাড়া, তিনি নিজেকে প্রতি মুহূর্তে সমসাময়িক রাখার চেষ্টা করেন। অনেকটা মোবাইল ফোনের মতো।’’ বাঙালি অভিনেতাকে তিনি একটি কথা বলেছিলেন, ফোনকে আপডেট করতে হয় প্রতি মুহূর্তে। তবেই সে সচল। একই ভাবে মানুষের মনন, স্মৃতিকেও ঝালিয়ে নিতে হয় সফটওয়্যারের মতো।
তার পরেই পাল্টা প্রশ্ন অম্বরীশের, এই ভাবনা যাঁর তিনি কখনও ‘বৃদ্ধ’ হতে পারেন?
আরও পড়ুন- কার প্রেমে মত্ত ‘মিঠাই’? ‘দিদি’ রচনাকে অবশেষে বলেই ফেললেন সৌমিতৃষা
আরও পড়ুন- 'পরিচয় দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই', অমিতাভের জন্মদিনে কেন এমন বললেন অজয় দেবগন