সংক্ষিপ্ত
সম্প্রতি একটি বিধ্বস্ত পেট্রোল পাম্পের ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। ভিডিওটি, আদৌ ত্রিপুরার সাম্প্রতিক হিংসার (Tripura Violence) সঙ্গে সম্পর্কিত, না পাকিস্তানের (Pakistan)?
ত্রিপুরায় ভয়ঙ্কর হিংসা (Tripura Violence) চলছে। মূলত শাসক দলের বিরুদ্ধে এই রকমই অভিযোগ করা হচ্ছে সিপিআইএম (CPIM) এবং তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) দলের পক্ষ থেকে। সম্প্রতি একটি পেট্রোল পাম্পের ভিডিও সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। পেট্রোল পাম্পটি ঘিরে ভাঙাচোরা ধ্বংসাবশেষ পড়ে, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন অনেকে। ভিডিওটি, ত্রিপুরার সাম্প্রতিক হিংসার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে দাবি করা হচ্ছে। সত্যিই কি তাই? ভিডিওটি সত্যতা নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহ জেগেছে।
বেশ কয়েকজন টুইটার ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে সঙ্গের ক্যাপশনে, এই ঘটনার জন্য ত্রিপুরা পুলিশের (Tripura Police) বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন। হ্যাশট্যাগ তৈরি হয়েছে, 'শেম অন ত্রিপুরা পুলিশ' (#ShameOnTripuraPolice)। তবে, টুইটার বা ফেসবুকের থেকেও ভিডিওটি বেশি শেয়ার করা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপে। অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপে সেই ভিডিওর বীভৎসতা দেখে শিউরে উঠেছেন। কিন্তু, ভিডিওতে যে ব্যক্তিদের দেখা গিয়েছে তাদের পোশাক, তাদের ভাষা - সবই ভিডিওটি আদৌ ত্রিপুরার কিনা, তাই নিয়ে বহু মানুষকে সন্দিহান করে তুলেছে।
এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে ভিডিওটির কয়েকটি স্ক্রিনশট নিয়ে, সেগুলি দিয়ে গুগল সার্চে বিপরীত চিত্র অনুসন্ধান চালানো হয়। তাতে পাকিস্তানের (Pakistan) সামা টিভির একটি ইউটিউব ভিডিও পাওয়া যায়। সেটি ছিল পাকিস্তানের একটি পেট্রোল পাম্পে বিস্ফোরণের বিষয়ে। সামা টিভির খবরে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল করাচির (Karachi) উত্তরে নাজিমাবাদ (Nazimabad) নামে এক এলাকায়। ওই খবরের সূত্র ধরে পাকিস্তানেরই জিটিভি নেটওয়ার্কের একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যেটি থেকে ওই ভাইরাল ভিডিওটির অনেক অংশই নেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওটি ত্রিপুরার বলে দাবি করা হচ্ছে
পাকিস্তানের সংবাদপত্র 'ডন'এও এই ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ঘটনাটি গত ২৯ অক্টোবরের। করাচির উত্তর নাজিমাবাদ লোকালয়ে ঘটা ওই বিস্ফোরণে অন্তত চারজন নিহত এবং দুই মহিলা-সহ ছয়জন আহত হয়েছিলেন। বিস্ফোরণটি ঘটেছিল ওই পেট্রোল পাম্পের বৈদ্যুতিক কক্ষে। এত জোরে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, যে তার প্রভাব আশপাশে বহুদূর পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। করাচি পুলিশের পক্ষ থেকেও ওই প্রতিবেদনে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা হয়েছে।
কাজেই এই ভিডিওটির সঙ্গে ত্রিপুরার সাম্প্রতিক হিংসার অভিযোগের কোনও সম্পর্কই নেই। ঘটনাটি গত অক্টোবর মাসে পাকিস্তানের একটি পেট্রোল পাম্পে বিস্ফোরণের ঘটার পরের ভিডিও। সেই ভিডিওকে ত্রিপুরার হিংসা বলে দাবি করে মিথ্যাভাবে শেয়ার করা হয়েছে।