করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কি আবারও ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে, চিন্তা বাড়াচ্ছে আমেরিকা ও চিন
- FB
- TW
- Linkdin
চিন, আমেরিকাসহ বিশ্বের একাধিক দেশে নতুন করে বাড়ছে করনোভাইরাসের সংক্রমণ। যা নতুন করে বিপদের আশঙ্কা তৈরি করেছে। সেই কারণেই আবারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন করে সতর্ক করেছে বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশকে। টিকাকরণের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিধিনিষেধগুলি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আমেরিকা ও চিনে করোনাভাইরাসের সমক্রমণ বাড়ার কারণে বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকটি রাজ্যকে সতর্ক করেছে। বলেছে ট্র্যাকিং আর টেস্টিং বাড়াতে। পাশাপাশি টিকাকরণের ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে বর্তমানে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমগুলি নতুন করে শুরু হয়েছে। তাই বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে। চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব।
বর্তমানে চিন কোভিড-১৯এর একটি তরঙ্গের সঙ্গে লড়াই করছে। শনিবার চিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারির পর এই প্রথম চিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। কোনও কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চিন রাজি নয় বলেও লকডাউন ডাকা হয়েছে বলেও চিন প্রশাসন সূত্রের খবর। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
শনিবার চিন প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ২ হাজার ১৫৭ জন। যার অধিকাংশই জিলিন প্রদেশের বাসিন্দা। চিনে নতুন করে কড়াকড়ি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞার। চিনে সোমবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৪৩৬ জন। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হল। রবিবার রাজধানী বেজিং-এর ছিল লকডাউন। গৃহবন্দি হয়েই ছুটির দিটটি কাটিয়েছেন শহরের প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি মানুষ।
যদিও চিন কোভিড নীতি শিথিল করার কথা অস্বীকার করেছে। কারণ একটা সময় কোভিড সংক্রমণ রুখতে চিন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সীমাবদ্ধ করা ও বহির্বিশ্বেরস সঙ্গে যোগাযোগ হ্রাস করার জন্য বহু সমালোচিত জায়নামিত জিরো - কোভিড নীতি শিথিল করছে না বলেও জানিয়েছে।
হংকং নতুন করে আক্রান্ত
স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন শুক্রবার ২০ হাজারেও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১, ০১৬,৯৪৪। হংকংএ মৃত্যু হয়েছে ৫৪০১ জনের। হংকং-এর স্বাস্থ্য আধিকারিকতা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন দেশের মানুষকে। কোভিড বিধি মেন চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফৌসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেছেন সংক্রমণ রুখতে নতুন করে লকডাউন জারি করা হতে পারে। তিনি আরও বলেছেন ওমিক্রন ও BA.2 এর উপভেরিয়েন্টই দ্রুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তিনি একটি টেলিভশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বলেন এবার মার্কিন নাগরিকদের বেছে নিতে হবে তারা সাধারণ জীবন না লক়ডাউনের বদ্ধ জীবন বেশি পছন্দ করবেন।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ব্রিটেন। কোভিড সম্পর্কিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা আরও জোরদার করা হয়েছে। তবে আগেই ব্রিটেনে কোভিড বিধি শিথিল করা হয়েছে। মাস্ক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ওয়ার্কফ্রম হোম। চালু করা হয়েছি অফিস।
দক্ষিণ কোরিয়াও কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছে। শনিবার এই দেশে নতুন করে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৮১,৪৫৪। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ওমিক্রন সংক্রমিত বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা আরও বলেছেন, সংক্রমণ রুখতে সবরকমভাবে লড়াই করা হবে। প্রয়োজনে নতুন করে লকডাউন জারি করা হবে।
চিন যখন লকডাউনের পথে তখন হংকং নতুন করে নিরাপদ সামাজিক দূরত্বের ওপর ডোর দিচ্ছে। বর্তমানে চিনে কঠোর লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি গণপরীক্ষার ওপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণের ওপরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এক মিলিয়েনের ওপর বলেও জানান হয়েছে।